সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১

নিজের জিবন থেকে নেয়া ছোট গল্প

 তোমার হৃদয়ের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে মনের বিস্তৃত আঙ্গিনা পেরিয়ে ভালবাসার স্রোতে বির্বতনের ধারায় বিবতির্ত হয়ে তরী ভিড়িয়েছিলাম তোমার কুলে। 


শূন্য তরী ভড়িয়ে দিয়েছিলে ভালবাসায় কানায় কানায়, কোন কিছু দাবী না করতেই উজাড় করে দিয়েছিলে দু’হাত ভরে। ঋনী হবার সুযোগ না দিয়ে চির জীবনের জন্য ঋনী করে রাখলে হৃদয়ের বন্ধনে মনোমন্দিরে। মোমের আলোয় আলোকিত করে রেখেছো এখনও আমার জীবনের প্রতিটি ক্ষণ।


  ভালবাসায় কাছে না থাকায় অবস্থান করছো অযতেœ অবহেলায়। যতটুকু প্রাপ্য আছে আমার কাছে তাও অপূরণ রাখছি দীর্ঘদিন। আবেগ ভরা কন্ঠে প্রায়ই বলো কি পেলাম জীবনে? আর কি পাবার বাকী আছে ?


 জীবনের কঠিন বাস্তবতায় হয়তো এ প্রশ্নের উত্তর কোনদিন দেয়া হবে না, মনের আবেগ লুকিয়ে কয়েক ফোটা চোখের জল ফেলা ছাড়া।


 সুখী করার অঙ্গীকার নিয়ে সত্যিকার ভালবাসায় জীবন অঙ্গিনা ভরিয়ে দিতে, সুখ স্বপ্নের বাসরসাঁজাতে বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে মাতৃভূমি ছেড়েছিলাম কয়েক বছর আগে। মা এবং মাতৃভূমির মায়া ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছি প্রবাসে।


  সৃষ্টিশীল মানুষের কাছে প্রবাস হলো দেয়ালহীন কারাগারসম। স্বপ্নরা প্রতিনিয়ত বাসাবাঁধে কিন্তু পূরণ হবার অবসর পায় না। সমস্ত স্বপ্ন এলোমেলো হয়ে যায়।


 রাত গভীর হলে আস্তে আস্তে স্বপ্নরা ভীড় করে মনের জানালায়, কাটে নির্ঘুম রাত অসংখ্য স্মৃতির ভীড়ে। মানুষের মন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বড় রহস্যময় মনের রহস্য ভেদ করা বড়ই কঠিন। প্রবাস জীবনের সমস্ত আদর আর অফুরান্ত ভালবাসা এই রহস্যে প্রতিনিয়তই ঘুরপাক খায়।


  মাঝে মাঝে মনে হয় ভালবাসার বরফগলা নদীতে আজ বড়ই সঙ্গীহীন,ভালবাসাহীন একা। রাত গভীর হলে আস্তে আস্তে দূশ্চিতা বাড়ে। মনের মাঝে দেশের ছোট ছোট স্মৃতি এসে ভীড় করে।


 জীবনের সমস্ত আদর,অফুরন্ত ভালোবাসার টানে মন ছুটে যায়,সোনারগাঁওয়ের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেষ্টিত ভিটিপাড়া গ্রামের পদ্মা বিধৌত জল-জোছনার কৈশোর প্রেমের তীর্থস্থান।


  আজও আমার মন প্রাণকে নাড়া দেয়, ভাবনায় স্বপ্নে আজও বিচরণ করি সরিষার ক্ষেতের পাশঘেষা মেঠো পথে আমার ছোট সন্তান সৌরভকে নিয়ে বিকাল বেলা ঘুরে বেড়ানো। 


মা, মাটির টানে গ্রাম্য মেঠো পথ ধরে সোনালী ধান ক্ষেতের পাশে। যেখানে শীষে খেলা করে ভোরের শিশির বিন্দু। সূর্য্যরে আলো পড়ে এক অরূপ দৃশ্য সৃষ্টি করে।


 যতক্ষন জম্মভূমির চিন্তুা মাথায় থাকে ততক্ষনই ভালবাসার সংস্পর্শে থাকা যায়। দেশের কথা ভাবলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। প্রতিটি প্রবাসীই জম্মভূমি ছেড়ে প্রবাসে থাকলেও মনের অজান্তেই দেশকে প্রতিমুহুর্ত অনুভব করে।


  একজন প্রবাসী সীমাহীন কষ্ট আর না পাওয়ার অতৃপ্তি নিয়ে প্রবাসী হয়। ভালবাসার কষ্টের সব সময় চোখের কোনে অশ্র“ হয়ে জমাট বাধার আগেই লুকিয়ে ফেলতে হয় দেশে অপেক্ষ্যমান প্রিয়জনদের কথা ভেবে। তাই প্রবাসীর দুঃখের অশ্র“ কেউ দেখে না। রুমালে মোছার আগেই মরুর তপ্তরোদে শুকিয়ে যায়। প্রতিটি রাত্রি ভোর হয় সঙ্গীহীন, ভালোবাসাহীন, মমতাহীন, একা। জীবনের দীর্ঘযাত্রায় অতীতের উৎসবের স্মৃতি বাংলার মাটি ও মানুষের মতো আমার অস্তিত্বে গভীর নোঙর বেধেঁ আছে আজও। বিদায় যে বড় কঠিন, বড় নির্মম সেদিন তা অনুভব করেছিলাম হাড়ে হাড়ে। দেশ প্রেম কি আত্মার সম্পর্ক কি সেদিন মন অনুভব করেছিল একান্ত করে। ১৩ই জানুয়ারী ২০১৪ই যখন আমি কুয়েত চলে আসি আমাকে বিদায় দিতে ঢাকা এয়ারপোর্ট সেদিন অনেকেই বোবা কান্নায় কেদেঁছিল।


  সবচেয়ে বড় একা হয়ে গিয়েছিল আমার সন্তান আমার দ্বিতীয় আত্মা। সে আমার কোলে গলা ধরে সবার দিকে ফেলফেল করে তাকিয়ে থেকে মাঝে মাঝে আমার গলায় চুমু দিচ্ছিল। আর আমি যেন অনেকটা বোবা পাথর হয়ে গিয়েছিলাম।


 সেদিন বিদায়ের বাঁশির সকরুণ সুর আজও আমাকে নীরবে কাঁদায়। একজন মানুষের শৈশব, কৈশোর, যৌবন, কর্মজীবন, এবং থাকে অবসর জীবনের বৃদ্ধকাল,জীবনের এই সময় গুলি যেন কোন সুষ্টিশীল মানুষের প্রবাসে না কাটে, সময় গুলি কাটে যেন মায়ের কাছাকাছি, মাটির কাছাকাছি, জম্মভূমির কোলে।


 প্রবাসী হয়ে বুঝলাম জীবনটা একটা একশন থ্রিলার মুভি। প্রতিমূহুর্তে নতুন নতুন দৃশ্যে হাজির হচ্ছি। স্বাভাবিক জীবনযাপন স্বাভাবিক মৃত্যু ভাবাই যায় না। প্রতিমুহুর্তে বিবেকহীন, মনুষ্যত্বহীন মানুষের কর্মকান্ড চোখের সামনে ভেসে উঠে। ভাবি কি ভাবে আমার সোনার দেশের সোনর মানুষ গুলি রাজনৈতিক কল্যানের কথা মুখে বলে কাজ করে সম্পূর্ন উল্টো।


  অতি সহজেই দেশের সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলে? ভাবি কিভাবে বিবেকবান মানুষ গুলি মনুষত্ব, মূল্যবোধ, বিবেকবুদ্ধিহীন হয়ে যায় নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য।


 একজন প্রবাসীর শ্রমে ঘামের অর্থে অনেক পরিবার চলে। এমন অনেক প্রবাসী আছে একমাস দেশে টাকা না পাঠালে সেই পরিবারে অনেক কিছুই বন্ধথাকে।


 আজ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল কিন্তু, দেশের মানুষ কখনোই প্রবাসীদের দুঃখ কষ্টের কথা ভাবে না। মাস শেষ অর্থেও অপেক্ষায় থাকে।


 আমার মাঝে মাঝে মনে হয় যারা প্রবাসী হয় তারা এক সময় টাকা কামানোর মেশিনে পরিনত হয়, তাদের আবেগ,অনুভূতি ধীরে ধীরে লোভ পেতে থাকে, দুঃখ কষ্টকে আর দুঃখ কষ্ট বলে মনে হয় না।


 বিবেক দয়া মায়া আবেগ একসময় ফুরেিয় যায়। আমার মতো করে আরো অনেক প্রবাসী শ্রমিকের জীবন রো-শোক থাকে কিন্তু সময়ের অভাবে কাউকে বলতে পারে না।


  তাই দুঃখ নিয়ে বিলাসিতা করার সুযোগ প্রবাসীদের নেই। দুঃখ নিবারন করার ইচ্ছো নিয়ে মা মাটি ছেড়ে অজানা অচেনা দেশের মাটিতে আমরা আশার ঘর বেঁধেছি, সত্যি কথা বলতে কি প্রবাসীর কষ্ট প্রবাসী ছাড়া আর কেউ বুঝে না।


 অনুমান করে সব কষ্ট বুঝা যায় না। স্বপ্নের প্রবাস বাস্তবে বিশাল আকারের এক দানব। প্রতি মূহুর্তে এ দানব নামক প্রবাস প্রতিটি প্রবাসীকে কুরে কুরে খায় গুন পোকার মতো।


 পৃথিবীর ওজন থেকে আরো বেশী ওজনের কষ্ট বুকে নিয়ে আমার মতো আরো অধিকাংশ প্রবাসী রাত্রি ভোর করে। দু’হাত ভরে যতদিন দেবার সামর্থ থাকবে ঠিক ততদিন পরিবারের সবার কাছে প্রিয়। আমাদেরকে সুখের মাইল ফলক হিসাবে দেখা হয়।


  একাকীত্বের বেদনায় আমাদের নয়নে যখন জল ঝরে কেউ আদর করে কাছে ডেকে এই জল মুছে দেয় না। নয়নের জল নয়নেই শুকায়।


 প্রবাসী যান্ত্রিক জীবনের সাথে যুদ্ধ করে আমরা প্রাণে বেঁচে থাকি তবে এই বাঁচাকে বেঁচে থাকা বলা যায় না। আমাদের এই যান্ত্রিক জীবন এক একটি মূহুর্ত অসম্ভ বেদনাদায়ক। মানুষের জীবন বিচিত্রময় একঅধ্যায়। জীবন চলার পথে কখনো-কখনো কঠিন বিপদের সম্মুখীন হতে হয়,ঝড়াতে হয় সহস্র অশ্র“।


 আপনজনদের ভয়ে বেড়াতে হয় কষ্টের রেখা। খনিকের এ ছোট্র জীবনে অমরা সৃষ্টির সৃষ্ঠ মানব জাতি হয়ে খনিকের দুনিয়ায় কত না কি করে যাচ্ছি। 


আমি যখন টকবগে একজন যুবক ছোট একটা সংসার আমাদের। মা আছে বাবা নেই, সেই ছোট কালে আমাদের এতিম করে চলে গেছেন পরপারে। বাবার কথা মনে হলে আজোও দুচোখের অশ্র“তে বুক ভিজে যায়।


 লেখা পড়া পুরা পুরি শেষ করতে না পারলেও জীবন চলার পথে যতটুকু প্রয়োজন তা হয়তো করেছি। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীন ভাবে চলাটা আজকাল বড়ই কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।


  অর্থ সম্পদের অভাবে কখনো-কখনো মানুষকে কঠিন বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। সংসারে নেমে আসে অভাব অনটন যন্ত্রনার আগুন। আর সে যন্ত্রনার আগুন নিয়ে ও মানুষ সামনের দিকে পথ চলতে থাকে স্বাপ্নীল জীবনটাকে সুন্দর সরে সাজাতে।


 মানুষের আয়ের উৎস না থাকলে দুঃখ,কষ্টে অভাবে দিন কাটাতে হয়। আর আয় করতে হলে চাই ব্যবসা বাণিজ্য চাকুরি। একটি চাকরির জন্য কত জায়গায় ধর্না দিলাম। বর্তমানে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে চাকুরীর ক্ষেত্রে।


 যে খানে একজন নিয়োগ দেওয়া হবে সেখানে প্রার্থী এসে ভীড় করছে শত-শত। না এতে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই,এটাই বাস্তব। অনেক শিক্ষিত হয়েও বৎসরের পর বৎসর ঘুরেও চাকরী পাচ্ছেনা অনেক যুবক। দেশের জনসংখ্যা বিরাট অংশ বেকার।


 স্বাধীনতার ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলো, আজো স্বাধীনতার সুফল তথা অর্থনৈতিক মুক্তি,ক্ষুধা, মঙ্গা ও দারিদ্রতা আমাদের দেশ থেকে দূর হয়নি একটি দেশ স্বাবলম্বী হতে ৪৩ বছর কি যথেষ্ট নয়?


  দুখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে আরও কত বছর লাগবে এ প্রশ্নটা রইলো দেশের বিবেকবানদের কাছে। এ ৪৩ বছর আমরা কি পেলাম।


 দেখলাম দেশের সমস্ত সম্পদ লুন্ঠিত যৎসামান্য বিকৃত চেহারার রাজনীতিবিদ নামধারীদের,আমলা কামলাদের দ্বারা। এরাই যুব সমাজকে বিপদে রাস্তায় ফেলে দিয়ে তাদের চরিত্র হনন করছে। বিপদগ্রস্থ যুব সমাজ দিশাহারা হয়ে পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।


 কর্ম নেই, মা বাবা ভাই-বোনদের মুখে অন্ন তুলে দেবার ক্ষমতা নেই, তুচ্ছ তাচ্ছিলতার আগ্রাসনে যুব সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করে ৭১-এ যুব সমাজের দেশ প্রেমের অংশ গ্রহণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। এখন যৌবন যার যুদ্ধে যারার সময় তার, কি করবে ভাবতে প্রতিদিন সন্ধ্যা হয়। ভাবনা শেষ হয় না।


 হবারও না, মা বাবার বকুনী ঘরে বিবাহযোগ্য বোন অথবা স্কুল কলেজগামী ভাইবোনের লেখা পড়া কাপড় চোপড় না দেবার বদৌলতে ব্যাকঠু হোম। সিদ্ধান্ত আসে বন্ধু মহল থেকে অতি গোপনে।


  এটি বড় কষ্টের। বিদেশ চলে যাও। এদেশে তোমার আমার কিছু হবে না। পদ্মা-মেঘনা-যমুনা তোমার আমার ঠিকানা। যমুনা ভাঙ্গনে বাড়ী ঘর গাছ পালা তলিয়ে গেছে। তাই ঠিকানাও নেই। বিদেশ যেতে হলে দৌড়-ঝাপ। ছুটাছুটি সন্ধান পেলেও সিকিভাগ সফলতা। বাকীটা ভিটে মাটি বিত্রি“ করে আত্মহত্যা অথবা বৈরাগ্য জীবন যাপনের জন্য রামগড়ের রাস্তা পরিস্কার।


  চোখের দেখা অনেক গোবর গনেশ গ্রামের পাতি নেতা আবুবক্কর ছিদ্দিক রবিন ওরফে বিল্লাল মুন্সির ছেলে-বোয়া ট্রাভেল এজেন্সী ওয়ালারা শত-শত কয়েক কুড়ি বেকার যুবককে যুদ্ধ বিগ্রহের আগুনে ঢেলে দিয়ে এসেছে মালশিয়া যাওয়ার জন্য নৌ চোরা পথে। অসহায় যুবকগুলোর কোন হদিস নেই। স্বজনদের আহজারি আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে। কেউ বলছে অনেকে মারা গিয়েছে নদী পথে শ্রমিক প্রেরণ কালে। সারাদেশের এমন আবুবক্কর ছিদ্দিক রবিন নামের পাতি দালালদের কোমরে রশি বেঁধে তাদের বিরুদ্ধে “ ছি-ছি” আন্দোলন শুরু হলে দৃর্নীতির একটা মূল তাগিদ সমাজ থেকে উৎপাটিত হবে।


  জানিনা এমন হবে কিনা। দেশের বড়-বড় নেতা আজ নিজেদের পকেট ভারি করছে যুব সমাজের জন্য কিছুই না। দুভাগ্যবশত এই সুন্দর সবার মধ্যে জাগে নাই। ভাগ-বাটোয়ারা করে তুমিও খাও,আমিও খাই। নিম্ন থেতলিয়ে যাচ্ছে একেবারে আমের ছোবরার ন্যায়। খেতে না পারলে যুব সমাজ করবেটা কি, না যেতে তখনই তাদের বদনাম হয়। অথচ ৭১র আগে তাদের সমাদর অনেক ছিল। এরা “আল্লা মেঘ দে পানি দে”ছায়া দের আল্লা ধ্বনিতে আল্লাহর কাছে খরা থেকে পরিত্রান পেতে পানি চেয়েছে। এরা ৭১র উত্তাল দিন গুলোতে কোটি স্মরণার্থীর সাহয্যে এগিয়ে আসছে।


  তাদের দৃঢ় মনে বলের কারণেই সুসজ্জিত এবং এশিয়ার সবচেয়ে ভালো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাক বাহিনীকে পরাস্ত করা সম্ভব হয়েছে। যুব সমাজের একটা আশা ছিল, এরা দেশের জন্য কিছু একটা করবে, দেশ উপকৃত হবে। ৪৩ বছর তা হয়নি, যুব সমাজ সবার আগে অবহেলিত। চাকুরী নেই তাতে কি হয়েছে। যুব সমাজ উন্নয়ন তথা কর্মসংস্থানের মত বাংলাদেশে প্রচুর সম্ভাবনা বিরাজমান। এক্ষেত্রে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় নানা পদক্ষেপ গ্রহন করা। দেশের প্রধান সমস্যা বেকার কর্মসংস্থান গ্রাম ওয়ারী প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যুব সমাজকে বিদেশের পথে পা বাড়াতে হবে না, প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিতে ক্ষুধার জ্বালায় মৃত্যুও কোলে ঢলে পড়তে হবে না। বেকারের অভিশাপে নিজের জীবন বিপন্ন করার প্রতিযোগিতা চলছে মহাসমারোহে।


  মরণব্যাধি নেশা পান করে যুব সমাজ ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। এমনও দেখছি মেধাবী ছাত্র বিশ্ববিদ্যায়ের পাঠ চুকিয়ে বেকার। শেষ অবধি নেশায় বুদ হয়ে নিজেকে লুকাতে ব্যর্থ চেষ্টা। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার হাজারো কিসসা কাহিনী। তেমনটা হয়েছিলো আমার জীবনে। অবশেষে সকল বাধা ছিন্ন করে পাড়িজমাই দুর পরবাসে। ১৫বছর আগে যখন প্রবাসের উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে রওনা দিচ্ছি তখন সবে মাত্র টক বগে যুবক। তার পর দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে দেশে গিয়ে বিয়ের সিঁড়িতে বসি। সময় গড়িয়ে মাস,মাস গড়িয়ে বছর তার পর হয়ে গেলাম বাবা। ছোট ছেলেটা আমার কোলে তাকে আদর করছি আর ভাবছি আদরের সন্তান ছেলেটিকে ছেড়ে কিভাবে থাকবো।


  সন্তানের মুখের দিকে থাকিয়ে দুচোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না আমি পরাজিত সৈনিকের ন্যায় দেশ থেকে চলে আসছি। দেশে রেখে আসছি আমার পরিবার পরিজনদেরকে। এক দেড় বছর পর দেশে যাই অতিথি হয়ে আর নিজ ভূমি হয়ে গেলো পরবাস। আবার চলে আসি সেই কর্মক্ষেত্রে। রয়ে যায় আপনজনরা। মাসের পর টাকা পাঠানো, চিঠি লিখা অথবা ফোনে ভালমন্দ জেনে নেয়া। এই চলছে ভানুমতির খেলা। দীর্ঘ সময়ে দেশের অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে।


  কাঁচা রাস্তা পাকা হয়েছে, পাকা রাস্তা গৎ হয়েছে, ছোটরা বড় হয়েছে আরো কত কি এখান থেকে দেশের অনেক আলোচিত অনালোচিত খবর হাবুডাবু খাই। শুনতে পাচ্ছি নানা খবর। ঘটনা ঘটার মূর্হুতে ইথারে ভেসে আসছে খবর। ভালো খবরে পুলকিত হই। দুঃসংবাদে খবরে দুঃচিন্তার সাগরে হাবুডুবু খাই। শেষ পযর্ন্ত বুঝেই নিলাম আমাদের প্রাণ প্রিয় বাংলাদেশ থেকে ভালো খবরের যে সম্ভাবনা আর নেই। অহরহ লেগে আছে বন্যা, খরা নদী ভাঙ্গন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ধাপ্পারাজ, বোমা হামলা, গুম খুন মানুষের সারি-সারি লাশ, নদ নদী আর রাস্তার পাশে অহরহ পাওয়া যাচ্ছে। সামনে আরো যে ভোগান্তি আছে জনগনের।


  তাই রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্ষমতার বা ক্ষমতার বাইরে যারাই আছেন বাংলার সাধারণ শান্তি প্রিয় জনগন আপনাদের দিকেই চেয়ে আছে। ইতিহাস বলে যুগে যুগে জাতির দুরযোগের মুর্হুতে রাজনৈতিকবিদরাই বুক পেতে দিয়েছে, নিজেকে কিপ্পন করে জাতিকে সংগঠিত করেছে, পরিত্রাণ দিয়েছে। আজো কি তেমন কেউ বেরিয়ে আসবে না? কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। কোন চেতনা চলছে কোনটা চলবে।


  নেকড়ে থেকে চিতার আবির্ভাব কিনা তাও ইদানিং ভাবিয়ে তুলছে আমাকে,আমার মত অনেককে। প্রবাস নামের অট্রালিকায় থেকেও নয়ন ঝরে বিরহে কাদেঁ স্বজনের টানে মা মাটির টানে “পরবাসে দেশের জন্য মন কাদে”ঁ। 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রবাসিদের কস্ট 😥

  আমাদের বুঝতে একটু কস্ট    হয় যে প্রবাসিরা  বিদেশ গেলে কেন দেশে আসে না বা দেশে আসার কথা চিন্তা করে না, না করার কারণ তারা দেশে ফিরলে তাদের ...