সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১

প্রবাসীদের ঈদ 😐😐😐

 ঈদ মানে খুশি ঈদ মানে আনন্দ। এই কথা সবাই মানলেও প্রবাসীদের জীবনে এই কথার বাস্তবতা খুজে পাওয়া মুশকিল। প্রবাসীদের ঈদটা একটু অন্য রকম। প্রবাসে অনেকেই আছেন যাদের জন্য ঈদের দিনটা অত্যান্ত কষ্টের। মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদ। এই ঈদকে নিয়ে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন আশা আকাংখা আর প্রস্তুতির কমতি থাকেনা। ঈদ আসে ঈদ যায় কিন্তু প্রবাসী শ্রমিকদের কষ্ট এতটুকুও কমেনা।


  ফজরের আযানের পর দল বেধে ছুটা-ছুটি,দলবেধে পুকুরে ঘোসল শেষ করে সামান্য মিষ্টি মুখ করে নতুন জামা কাপড় পরে ঈদগাহ মাঠে যাওয়া এখন শুধুই স্মৃতি। এখন আর নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাশের বাড়ির কেউ ঢাক দিয়ে বলেনা  সেমাই খেয়ে যাও। এখন আর নতুন জামা পরে সালাম করলে কেউ নতুন টাকার নোটগুলো হাতে উঠিয়ে দেয়না। এসবের একটাই কারন  আর তা হলো আমি এখন বাংলাদেশ থেকে অনেক অনেক দুরে। সৌদি আরবের মরু প্রান্তরে।


  এখানে ঈদ মানে শুন্যতা, ঈদ মানে না পাওয়ার কষ্ট। পবিবার পরিজন ছাড়া ঈদ যে কত কষ্ট তা একমাত্র প্রবাসীরাই বুঝে। সকাল হলেই ঈদ এখনো আছি ডিউটিতে। শেষ রাতে ঘোসল সেরে সন্ধ্যা রাতের বাশী বাত এর বাশি তরকারী খেয়ে ঈদের নামাজে যাওয়ার প্রস্তুতি। পুর্বাকাশে সুর্য মামার দেখা পাওয়ার সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায় ঈদের নামাজ । এর মাঝে আসতে শুরু করবে দেশ থেকে আপনজনদের মিসকল আর খুদে বার্তা।


  ঈদের প্রস্তুতি জানার জন্য ফোন করেছিলাম শারমিন কে। ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করতেই পাশ থেকে আমার দুই বছরের ছোট মেয়েটি কি যেন বলতে চাইছে । তার মাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম সে বুঝাতে চেয়েছে  গতকাল বাজার থেকে আমার জন্য লাল টকটকে জামা আর বাঁশিওয়ালা জুতা এনেদিয়েছে। আর সেটা তার খুব পছন্দ হয়েছে। ছোট্র মেয়েটার অস্পষ্ট কথাগুলো শুনে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেলো ।


 মা-মেয়ে দুজনের কথা শুনছিলাম আর চোখের পানি মুছতেছিলাম টিস্যু দিয়ে ।সবকিছু খুলামেলা না বললেও এতুকুটু বুঝতে পেরেছি ঈদে খরচ করার জন্য যে টাকা পাঠিয়েছি তা বর্তমান সময়ের জন্য যথেষ্ট নয়। বললাম আজকালের মধ্যেই আরো কিছু টাকা পাঠিয়ে দিবো টেশন করবেন না। জানলাম সবার জন্য কেনাকাটা শেষ। 


এখন শুধু অপেক্ষা ঈদের দিনটীর জন্য। এতূকু জেনে ভালো লাগলো আমাদেরর কষ্টের উপার্জিত টাকা দিয়ে আমাদের পরিবার সুখে -শান্তিতে ঈদ করতে পারছে। এটুকুই প্রবাসীদের স্বার্থকতা।


  ঈদের নামাজ আর দেশে  ফোন করার পর  কষ্টের তীর্বতাটাকে আরো ভারী করে ঘুমানোর প্রস্তুতি। বুকফাটা কষ্ট আর যন্ত্রনাটাকে  বুকে নিয়ে বিছানায় যেয়ে চোখের পানিতে বালিশ বিজিয়ে একটু ঘুমানোর চেষ্টা যেন কষ্টের ভারটা একটু কমে।


 আর তাতেই দুপুর ঘনিয়ে পুর্বের সুর্যটা পশ্চিমে হেলতে শুরু করে। বিছানা থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে সামান্য কিছু মুখে দিয়ে দু'এক জন বন্ধুকে সাথে নিয়ে সামান্য আনন্দের প্রত্যাশায় অজানার উদ্দেশ্যে ছুটে চলা। এভাবেই কেটে যায় প্রবাসীদের ঈদ নামের কষ্টের দিনটি।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রবাসিদের কস্ট 😥

  আমাদের বুঝতে একটু কস্ট    হয় যে প্রবাসিরা  বিদেশ গেলে কেন দেশে আসে না বা দেশে আসার কথা চিন্তা করে না, না করার কারণ তারা দেশে ফিরলে তাদের ...