দেশের সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পর্ক গভীর হয়েও গভীর হতে পারে না, তার কারণ প্রবাসীদের কখনোই দেশ সম্মানের চোখে দেখে না বা তাদের মূল্যবোধের জায়গাটা দেয় না।
কারণ প্রবাসীরা দেশের বাইরে থাকে বলে। প্রবাসীরা দেশের জন্য দেশ ছেড়ে যায় অন্য দেশে এটা বুঝলেও বোঝে না দেশের মানুষ।
বেশ বড় বড় মানুষ বলে, প্রবাসীরা দেশ ছেড়েছে দেশের প্রতি তাদের মায়া, দেশের প্রতি তাদের টান নেই বলে, কিন্তু তারা এটুকু বোঝে না বা এটুকু বোঝার ক্ষমতা তাদের নেই যে,
আমাদের দেশে কর্মসংস্থানেরর অভাবেই তারা দেশ ছেড়েছে, আমাদের দেশের মানুষজনদের ভালো রাখার জন্য তারা দেশ ছেড়েছে।
দেশ প্রবাসীদের ভুলে গেলেও প্রবাসীরা কখনো দেশের কথা ভোলে না, তারা ভুলতে পারে না, কেননা সে সেদেশের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
সুতরাং বলা যায়, প্রবাসীদের সঙ্গে দেশে সম্পর্কটা ততটা বন্ধুত্বপূর্ণ না হলেও দেশের প্রতি প্রবাসীদের একটা টান আছেই শুরু থেকে।
কেননা তারা তাদের আপনজনদের দেখা পাওয়ার জন্য যেখানেই যাক না কেন সবশেষে তাদের দেশেই ফিরে আসতে হয়, মা বলে ডাকার জন্য নিজের গ্রামটার মনোমুগ্ধকর প্রতিচ্ছবি তাকে বার বার দেখায় যেন তার টান, দেশের প্রতি তার মায়া আরো তীব্র হয়ে ওঠে তার কাছে।
যে তীব্রতায় মিশে থাকে মা, মাটি, দেশ, মমতা অনেক কিছু। যা আসলে প্রবাসীদের মতো করে ভেতরে ভেতরে আর কেউ এত গভীর করে লালন করতে পারে না।
পারবেই বা কেমন করে, প্রবাসীরা যে তাদের মায়া ত্যাগ করে অন্য দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারে না বা অর্জন করলেও তাদের বিবেক তাদের অর্জন করতে দেয় না, সবসময় তাদের ভেতরে ভেতরে বুকের মধ্যে বাজতে থাকে যে, এটা তোমার দেশ না, এটা তোমার দেশ না।
তোমার দেশ বাংলাদেশ। তখন প্রবাসীরা নতুন করে সবকিছু দেখতে শুরু করে, যে দেখায় মিশে থাকে দেশের প্রতি গভীর মমতা।
এই মমতাই তাদের আবার দেশে ফিরিয়ে আনে, প্রিয় মানুষের কাছে এসে তারা তাদের মুখ দেখে প্রবাসে থাকার তৃষ্ণা দূর করে। প্রবাসীরা আমাদের দেশের সম্পদ।
তারা না থাকলে আমাদের দেশের উন্নতি এতটা চোখে পড়ত না, বাংলাদেশের নামটা অন্যান্য দেশের মতো এত স্পষ্ট করে পরিচিতি পেয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারত না বা তার কাজ সম্পর্কে, এই দেশ সম্পর্কে মানুষের কোনো ধারণা হতো না
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন