সোমবার, ৯ আগস্ট, ২০২১

প্রবাসিদের কস্ট 😥

 আমাদের বুঝতে একটু কস্ট  হয় যে প্রবাসিরা বিদেশ গেলে কেন দেশে আসে না বা দেশে আসার কথা চিন্তা করে না, না করার কারণ তারা দেশে ফিরলে তাদের আপন মানুষগুলোর যে সুখটা আছে বিদেশ থাকাবস্থায়। তাদের সে সুখ থাকবে না দেশে ফিরলে। ... কেননা তারা তাদের কাছে থাকা মাতৃভূমিকে অনুভব করতে পারছে না যেমনটা পারে দেশের বাইরে থাকা

শুক্রবার, ৬ আগস্ট, ২০২১

কষ্টের প্রবাস জীবন 🥺

 আর কত কাল প্রবাসিরা দেশে অবস্থিত আত্মীয় স্বজন দ্বারা অার্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ।যারা নিজের কথা না ভেবে নিজের পরিবার কে সুন্দর ভাবে চালানোর জন্য কতই না কষ্ট করে প্রবাসে । দিনের পর দিন কতই না কষ্ট করে গায়ের ঘাম ঝড়ায় ।


মা, বাবা, ভাই ও বোনের কতই না আশা পূরন করে । মাস শেষ না হতে টাকার বরাত চলে আসে আগামী মাসে এত টাকা লাগিবে। পরিবারে লোক জন শুধু প্রবাসিদের টাকাই দেখে নিজের অর্জিত অর্থ দেখেনা । যার প্রবাসে থাকে তারা একটু আবেগ পূর্ন হয়ে থাকে।

পরিবারে কোন লোকের সমস্যা হক বা না হক আগে ছেলে বা ভাইযের কাছে টাকার বাইনা দেয় যেহেতু প্রবাসিরা আবেগ পুর্ন একটু কিছু হলে মনে করে মহাবিপদে আছে আমার মা, বাবা, ভাই ও বোন । এই সব কথার বলা কারন আমার এক বন্ধুর প্রবাস জীবনের কথা গুলো সবাইকে বলিতে চাই সেই জন্য.......

আমার বন্ধুর নাম বলিতে চাই না শুধু তার প্রবাস জীবনের কষ্টের কথা বলিতে চাই । তবে ব্লগে লেখার পরে বলিব । সে ২০০৪ সালে প্রবাসে আসে লেখা পড়া বেশি করে নাই তার কাজ যোগে ইন্টারনেট কার্ফেতে ।

তার জীবনের প্রথম কাজ এর আগে কোন দিন কামলা দেয়নি । সে যখন কাজে যোগ দেয় সে কম্পিউটার জানে না । যেহেতু কম্পিউটার জানেনা তাই তার কাজ হয় কম্পিউটার টেবিল পরিষ্কার করার । তার কাজের সময় নিধারন হয় ১৮ ঘন্টা খুবই কষ্ট পূর্ণ কাজ তার বেতন ধরা হয় ৬০০ দেরহাম কার মধ্যে থাকা ও খাওয়া ।

এর মধ্যে সব কিছু নয় ভাবা খুবই কষ্টের আমাদের শুনিতেই কষ্ট লাগিতেছে তাহলে তার মনে কেমন করে ছিল ভাবাই কষ্টের । তার বাবা ছিল না । তারা তিন ভাই ও এক বোন আর সে ছিল সবার ছোট । সে তার বড় ভাই কে বাবা মতই শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস করিত । এক কথাই অন্ধবিশ্বাস । প্রবাস থেকে সে শুধু তার সঙ্গে কথা বলিত আর তার কথাই শুনিত । যেহেতু অল্প বেতন বেশি কাজ তার মনে অনেক কষ্ট হত কিন্তু সে সব কথা বলিত না ।

আমার নিজ হাতে একটি গল্প প্রবাসে বসে লেখলাম🥺

 Exile does not mean money,

 it is the way to build life,

 Exile does not mean cheer,

 Anupam is one Becca.

 Exile does not mean smile,

 tears of tears,

 Life means the force of building life in the world.

 Exile means a colorful letter of darling,

 The exile is the love of the people Preety.

 Exile is the pr̥raṇa separation small small Hope,

 Exile is brother's smile, sister's Happy birthday to you Exile is the thrill of happiness in the father's chest.

 Exile is the Erin of smile on mother's face,

 Exile means the hands of the sabādhīnatā,

 Exile means the one of life with work Sensational.

 Exile means discipline comes every day,

 Life means past memories are only in the eyes.

 Exile means a lot from life Lost,

 Exile means your own creation I don't want to be able to do it.

 Foreign means to shake the mamta of the country,

 Life is just a game of money.

প্রবাস জীবনের এক অসমাপ্ত গল্প😥😥

 প্রবাস জীবন মানেই কষ্টের । তারপরও কিছু কিছু কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা থাকেনা । এমনি এক অসহনীয় কষ্টের কাহিনি আপনাদের জন্যঃ

  জীবনের আর্ধেকটা সময় প্রবাসে চলে গেল। আমার মা বাবা,ভাই বোন, বউ বাচ্চা সবাই বলে আমি নাকি সফল প্রবাসি, আমার পরিবার নাকি গর্ব করে আমাকে নিয়ে। আমার বাবা তো প্রায় বলে আমি নাকি তার সেরা সন্তান । আগে পরিবারের কথা শুনে খুব ভাল লাগত।

  নিজেকেই সুখি মনে করতাম কিন্তু এখন কেন জানি আর এই সব কথা শুনতে ভাল লাগে না খুব বিরক্ত লাগে। আর বিরক্ত লাগার কারন হলো বয়সের ভার, যাই হোক এখন ভাবতাছি দেশে চলে যাবো, দেশে গিয়ে ব্যবসা করবো যে ২৫ লক্ষ টাকা আছে সে গুলো দিয়ে। বারি ঘর তো সবাই করলাম। এখন যে টাকা গুলো আছে সেগুলো দিয়ে কিছু একটা করে পরিবারের সাথে থেকে বাকী জীবনটা কাটিয়ে দেব।

  হটাৎ একদিন বাবা বললো বাড়িতে বিল্ডিং তোলার জন্য। আমি বললাম বিল্ডিং তোলার টাকা কই পাবেন। তখন বাবা বললো কেন ব্যাংকে যে টাকাগুলো আছে । ব্যাংকের টাকা গুলো না হলে কয়েক লাখ টাকা ঋন করবো , তুই মাসে মাসে ঋন শোধ করবি। আমি বললাম না বাবা বিল্ডিং তোলার দরকার নাই। যদি বিল্ডিং তুলেন তাহলে যে আমার বাকি জীবনটাই প্রবাসে কাটাতে হবে। তখন বাবা বললো আমার অনেক দিনের ইচ্ছে বিল্ডিং ঘুমাবো ।

  এদিকে বউ একই কথা বলছে। মা ও বলছে পাশের বাড়ি অনেকই বিল্ডিং তুলছে তুই কেন তুলবি না। আমার ছোট ছোট ছেলে মেয়ে থেকে শুরু করে বাড়ি সবাই বলছে বিল্ডিং তুলতে। বিল্ডিং তুললে নাকি সমাজে মানুষের কাছে দাম পাওয়া যায়। সমাজে বড় লোক হিসাবে পরিচিত হওয়া যায়। কিন্তু কেউ আমার কথা শুনলে না।

  এদিকে আমার কষ্টটা কেউ বুঝলো না। আমি জানি বিল্ডিং তুলে আমার আরো ১০ বছর প্রবাসে থাকতে হবে। কারন যে টাকা গুলো আছে তা বিল্ডিং তুলতে খরচ হয়ে যাবে। ছেলেমেয়েদের ভবিষৎতের জন্য বাকি জীবনটা প্রবাসে কাটাতে হবে। কিন্তু এই প্রবাস জীবন টা আমার আর ভাল লাগে না। আজ আমি অনেক ক্লান্ত, বয়সের ভারে শরীলের শক্তিগুলো প্রতিনিয়তো ঝড়ে পরছে। এখন আর আগের মত কিছু ভাল লাগে না।

  যখন বাড়িতে বললাম আমি দেশে চলে আসব। তখন আমার কথা শুনে সবাই অভাগ হয়ে গেল। হাজারটা প্রশ্ন কেন দেশে আসবো। দেশে এসে আমি কি করবো এমন হাজারটা প্রশ্ন। আমার বাবা তো বলে ফেললেন আমি নাকি দেশে এসে কিছু করতে পারবো না। দেশের অবস্তা নাকি ভাল না,আর আমার দ্বারা দেশে ব্যবসা করাটা অসম্ভব। আমার বউ বলে দেশে এসে কি করবেন বিদেশ আছেন ভাল আছেন।

  এখন দেশের ব্যবসা – বানিজ্য ভাল না। নিজের সন্তানদের ভবিষৎতের কথা চিন্তা করে হলে ও বিদেশ থাকতে হবে। বাবা আর বউয়ের কথা শুনে অনেক কষ্ট পেলাম। যে আমি প্রবাসে কাটিয়ে দিলাম এতটা বছর। প্রবাসে প্রতিটি দিনই করতে হয়ে যুদ্ধ। আর সে আমি নাকি দেশে গিয়ে কিছু করতে পারবো না।

  সবাইকে বললাম কেউ আমার কথা বুঝল না। সবচেয়ে বেশী কষ্ট পেলাম মা র কথা শুনে মা বলে, বাবারে তোর মত সহজ সরল মানুষেরা দেশে এসে কিছু করতে পারবি না। এই দেশটা ভাল মানুষের জন্য নয়। যতদিন বিদেশে থাকতে পারিস ততদিন ভাল থাকবি। অথচ এই আমি অপরিচিত দেশে ভিন্ন ভাষা মানুষের সাথে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিলাম। একজন সফল প্রবাসী বটে। অনেক টাকা পয়সা রোজগার করলাম।

  এই আমি নাকি নিজ দেশে গিয়ে কিছু করতে পারবো না। খুব জানতে ইচ্ছে করে যারা দেশে আছে তারা কি বেঁচে থাকে না। তারা কি না খেয়ে থাকে। হয়তো তাদের সংসারে বিলাসিতা নেই দামি দামি খাওয়া, দামি পোশাক। তবু তো তারা বেঁচে থাকে। হয়তো দেশে থাকলে জীবন যুদ্ধটা একটু কঠিন। আমার সবকিছু ভুলে মেনে নিলাম পরিবারের সিদ্ধান্তকে।

  কারন বাঙ্গালিরা পরিবারবিহীন থাকতে পারে না। কিন্তু কেন আপন মানুষগুলো এত স্বার্থপর হয়। আমিতো চেয়ে ছিলাম বাকি জীবনটা ছোট একটা ঘর তুলে বউ বাচ্চা, মা বাবাকে নিয়ে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেব। আমার চাওয়াগুলো কেন প্রিয় মানুষগুলো বুঝে না। আজ যে আমি অনেক ক্লান্ত । আমি যে পারছি না বয়সের ভারে জীবনটাকে চালিয়ে নিতে।

  আমি জানি না আরও কত বয়স প্রবাসে কাটাতে হবে হয়তো মৃত্যু অব্দী, আর তা যদি হয় আফসোস নেই। আমি ও চাই যেন আমার মৃত্যুটা একজন সফল প্রবাসী হিসেবে এই প্রবাসেই হয়। আর তখন পরিবার, সমাজ, দেশ আমাকে একজন সফল প্রবাসী হিসাবে গর্ব করব। গল্পটা এখানে সমাপ্তি হলে ভালই হতো। কিন্তু প্রবাসীদের একটি গল্পের পর অরেকটি গল্প শুরু হয়। আর এই গল্পের সমাপ্তি করতে গিয়ে জীবন থেকে চলে যায় অনেক গুলো বছর। প্রবাসিদের শুধু টাকা উপার্জন কারী রোবট না ভেবে পরিবারের একজন ভাবি।


প্রবাসীদের জীবন কাহিনী😥😥

 >>প্রবাস মানে বিদেশ বা দূরদেশ, প্রবাস মানে আত্মীয়স্বজন বিহীন বছরের পর বছর একাকী কাটিয়ে দেয়া, প্রবাস মানে দেয়ালবিহীন কারাগার, প্রবাস মানে শত দুঃখ কষ্টের সঙ্গে বিরামহীন জীবন যুদ্ধ করা।


 ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় জীবিকার তাগিদে কারো ছেলে, কারো ভাই, কারো বাবা, কারো স্বামী অন্যের সুখের জন্য নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে দেশান্তরী হয়। এই দেশান্তরী হওয়া মানুষগুলোর সুন্দর একটি নাম প্রবাসী।

 প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা অর্থাৎ রেমিটেন্স বাংলাদেশের আয়ের প্রধান উৎস। বাংলাদেশের প্রায় ১ কোটি মানুষ প্রবাসী। এই এক কোটির সাথে পরিবারের ৫ জন করে সদস্য হিসাব করলে মোট ৬ কোটি মানুষের ভাগ্য জড়িত।

 আমি শতকরা ৯০ ভাগ প্রবাসী অর্থাৎ সাধারণ শ্রমিকদের কথা বলছি। প্রবাসীরা মাসিক যে বেতন পায় তার এক- তৃতীয়াংশ নিজের রুম ভাড়া,খাওয়া, মোবাইল ও অন্যান্য খরচে চলে যায়।

 বাকি দুই- তৃতীয়াংশ পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয় ; তাতে ঘর খরচ, ছেলে- মেয়ের স্কুলের খরচ, ভাই -বোনের বিবাহ, মা -বাবার চিকিৎসা খরচ ও সহধর্মিনীর হাত খরচ ইত্যাদি।

 সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে। কিন্তু অনেকের ভাগ্যে ঠিকমতো বেতন জোটে না,  (৪-৫) মাস পর্যন্ত বেতন বাকি থাকে।তখন ধার-কর্জ করে প্রিয়জনের সুখের জন্য টাকা পাঠিয়ে থাকে।

 কিন্তু সে দুঃখ কাউকে বুঝতে দেয় না। নিরাশার অতল গহবরে হারিয়ে যাওয়া মানুষগুলো চোখের নোনাজল উপেক্ষা করে বুকের কষ্ট বুঝতে না দিয়ে বলে মা আমি ভালো আছি, বাবা আমি ভালো আছি। প্রতিটি টাকা খরচ করতে থাকে দুইবার ভাবতে হয়।

 এবার আসি প্রবাসীদের জীবনযাত্রা। কর্ম ভেদে কাজ ভিন্ন হয় যেমন বড় কোম্পানিতে ভোর চারটায় উঠে দুপুরের খাবার নিয়ে (৩০-৪০) কিলোমিটার দূরে বিল্ডিং কন্সট্রাকশন এর কাজে যেতে হয়।

 দোকানের চাকরি সকাল পাঁচটা- ছয়টা থেকে রাত দশটা- এগারোটা পর্যন্ত। আর সবচেয়ে কষ্টের কাজ হচ্ছে বাগান ও ঘরের চাকরি। যেখানে শুধুমাত্র নিদ্রাটাই বিশ্রাম।

 একটু বিশ্রাম নেবে তার সুযোগ নেই ; শুধু কাজ করে যাও। শুধু তাই নয়, তার উপর আবার মানসিক নির্যাতনও চলে। বছরে রমজান ঈদ ও কোরবানি ঈদ দুই দিন করে মোট চার দিন বন্ধ পাওয়া যায়।

 জীবনের সোনালী দিন ও মধুময় যৌবন হাসিমুখে বিসর্জন দেয়। মা-বাবার স্নেহ , ছেলে মেয়ের আদর ,স্ত্রীর ভালোবাসা ,ভাই বোনের মমতা থেকে বঞ্চিত হয়। এমনকি পরিবার ও সমাজের সব অনুষ্ঠান থেকেও বঞ্চিত। 

বছরের পর বছর যাদের জন্য তাঁরা প্রবাসে; সেই পরিবারও অনেক সময় তাদের ভুল বুঝে, মনে কষ্ট দেয় । তাঁদের সব সময় এটা -ওটা পাঠাতে বলে। পরিবারের অন্য সদস্যদের দ্বারা তাঁরা অবহেলার শিকার হয়।

 পরিবার ও তাদের দুঃখ বুঝেনা, এ এক নির্মম পরিহাস। এই কষ্ট কাকে বলবে? কে শুনবে? কার জন্য করলাম ? এটা আমার কথা নয়, প্রতিটি প্রবাসীর আত্মকথা। প্রবাসে একা থাকা, নিজের ও পরিবারের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা খারাপ পরিবেশে কাজ করা ইত্যাদি কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, হূদরোগ, কর্মক্ষেত্রে বা সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি মাসে (১০০-১৫০) জন ফিরে লাশ হয়ে। এখন নিশ্চয়ই দেশের মানুষ আর প্রবাসের মানুষ পার্থক্যটা বুঝতে পেরেছেন।

 এখন প্রবাসীদের একটু সুখ দুঃখের কথা বলি। সুখ হচ্ছে মাস শেষে যখন হাতে বেতন আসে এবং তা পরিবারের কাছে পাটায়; তখনই আনন্দ তখনই সুখ। যখন শুনে মা বাবা সহ পরিবারের সবাই ভালো আছে  তখন এক মহা আনন্দ। 

দুঃখ হচ্ছে মাস শেষে টাকা না পাওয়া এবং বাড়িতে কারো অসুস্থতা এবং সবচেয়ে কষ্টের হচ্ছে যখন বিদেশে থাকা অবস্থায় আপন জনের মৃত্যু সংবাদ।

 তাই প্রবাসী পরিবারের কাছে মিনতি আপনারা প্রবাসীর চাওয়া-পাওয়া কোন সময় বুঝতে চেষ্টা করেননি? প্রবাসীরা পরিবারের কাছে একটু সহানুভূতি ও সুন্দর ব্যবহার কামনা করে তাও আপনারা দিতে ব্যর্থ।

 দুঃখের সাথে বলছি প্রবাসীদের জন্য নূন্যতম কেউ ভাবে না। তাই প্রবাস মানে নিঃসঙ্গতা, প্রবাস মানে দুঃখ কষ্টের সাথী, প্রবাস মানে নিজে রান্না করে খাওয়া, প্রবাস মানে জুন, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর মাসে ৪৫ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাজ করে যাওয়া, প্রবাস মানে ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও চোখ বুজে সহ্য করা, প্রবাস মানে দীর্ঘ নিঃশ্বাস।

 সবকিছু থেকে বঞ্চিত হওয়া সত্ত্বেও পরিবার সমাজ এবং দেশ থেকে শুধু অবহেলা পেয়েছে। আমি একটু ব্যাখ্যা করি, কষ্টার্জিত টাকা প্রবাসীরা পরিবারকে দিয়ে থাকে সেই টাকা সমাজ ও দেশের জন্য খরচ করেন।

 তার মানে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে দেশের উন্নতি হয় দেশে কাজ করা আর বিদেশের মাটিতে কাজ করার পার্থক্য অনেক কিছু। নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝেছেন আপনারা।

 বিমানবন্দরে প্রবাসীদের কামলা বলে অপমান করা এবং মালপত্র নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হয়। প্রবাসীরা কি চাই? বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সুন্দর ব্যবহার ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা।

 প্রবাসী পরিবারকে আইনি সহায়তা, চিকিৎসা, ব্যাংক, শিক্ষা ও সামাজিকতায়  অগ্রাধিকার দেওয়া। দুঃখের বিষয় সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছ থেকে ন্যূনতম সেবা পাওয়া যায় না। প্রবাসীদের প্রতি দেশ ও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে।

 সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমা ও মা বাবার দোয়া বা আশীর্বাদে প্রবাসীরা অনেক বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পায়। বাংলাদেশের সৈনিকরা যেমন দেশরক্ষার অতন্ত্র প্রহরী; ঠিক তেমনি প্রবাসীরাও দেশ উন্নতির চাবিকাঠি ।

 সৈনিকরা যদি অধিকার পায় তাহলে প্রবাসীরা কেন নয। প্রবাসীরা সৈনিকের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। প্রতিটি প্রবাসী এক একটি জীবন যুদ্ধের সৈনিক। কেউ না হেঁসে অন্যের হাঁসি পেতে ভালোবাসে ! আবার কেউ না খেয়ে অন্যকে খাওয়ানোর জন্য চেষ্টা চালিয়ে যায় ! আবার কেউ অন্যের সুখের জন্য নিজের সুখ বিসর্জন দিয়ে দেয়।


প্রবাসে প্রিয়জনের সান্নিধ্য

 >শুধু অজানাকে জানার আর অচেনাকে চেনা নয়, জীবিকা ও জীবনের তাগিদে, সোনালী স্বপ্নের হাতছানিতে সাত সমুদ্দুর তের নদী পার হয়ে বাংলাদেশিরা ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর প্রতিটি কোণে। নিজের দেশ, নিজের জন্মভূমি নিজের দেশের মাটি আর প্রবাসজীবনের মধ্যে আকাশ পাতাল ব্যবধান।

 প্রবাস জীবন মানে নিষ্ঠুর, নিঃসঙ্গ জীবনযাপন এবং প্রিয়জনের সান্নিধ্য থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে দেয়ালবিহীন কারাগারে এতিমের মতে বসবাস করা। কারও দুঃখ কেউ বুঝতে চেষ্টা করে না। নিজের দুঃখ নিজে অন্তরে রেখে নীরবে কান্না করতে হয়। প্রবাসে যারা এসেছেন একমাত্র তারাই প্রবাসজীবন যে কেমন নির্দয় ও নির্মম তার ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।

 শস্য-শ্যামলা সবুজেঘেরা সোনার বাংলাদেশ এবং মা-বাবা, ভাই-বোন আত্মীয়স্বজন এমনকি নিজের প্রিয় স্ত্রীর মায়া-মমতা ভালোবাসা ত্যাগ করে, সংসারের সবার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য, আর্থিক উন্নতির জন্যই প্রবাসের মাটিতে পা রাখতে হয়।

 বিদেশে এসে চাকরি করে অনেক টাকাপয়সা বাড়িতে পাঠাব। দুঃখের ছায়ার পরিবর্তে সুখের আলোতে সংসার উজ্জ্বল হবে। এ প্রত্যাশা বুকে নিয়ে আমরা প্রবাসে এসেছি। কিন্তু আমাদের সেই সুখ, সেই সুখের স্বপ্ন সবাই কি পূরণ করতে পেরেছি? না।

 বেশির ভাগ প্রবাসীই তাদের আশা-আকাঙ্খা এবং তাদের যে উদ্দেশ্যে প্রবাসে আসা তা বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয় না। কারও মালিক ঠিকমতো বেতন দিচ্ছে না, আবার কেউ দেশ থেকে যে বেতনের কথা শুনে এসেছিল, তারা দেখতে পেল সেই বেতনের সঙ্গে কোনো মিল নেই। আবার সঠিক বেতন পেলেও সে বেতন নিয়মিত নয়।

 সবাই যে খারাপ অবস্থায় আছেন তা কিন্তু নয়। অনেক বাংলাদেশি ভাই আছেন তারা ভাল পদে চাকরি করে বেশি বেতন পাচ্ছেন। তাদের পরিবার পরিজনেরা সুন্দরভাবে দিনাতিপাত করছেন।

 তাই আমার অনুরোধ যারা বিদেশে চাকরির জন্য নিজ মাতৃভূমি ত্যাগ করার চিন্তাভাবনা করছেন তারা যেন একটু যাচাই বাছাই করে ভিসা এবং কন্ট্রাক্ট ফর্ম দেখে বিদেশে পাড়ি জমান। আর দেশে যদি কোনো ভালো চাকরি করা যায় তবে তাই করা উচিত। দেশের ছেলে দেশের মাটিতে থেকে যে কোনো ভালো চাকরি বা ব্যবসা করতে পারেন তাহলে কোনো কথাই নেই ।

 প্রবাসীরা যখন দেশে পরিবারের মানুষদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন, তখন কেমন আছিস, কোনো চিন্তা করিস না, আমরা ভালো আছি, বাড়ির সবাই ভালো আছে, কোনো সমস্যা অথবা সমস্যার সমাধান, খাওয়া-দাওয়া ঠিকমতো হচ্ছে কিনা এই বিষয়গুলোই বলেন। কেউ কেউ অনেক সময় ঝগড়া করে, তর্ক করে, নালিশ করে।

 দেশ থেকে যারা ফোন করেন বিশেষত যাদের প্রবাসজীবনের অভিজ্ঞতা নেই, তারা একজন প্রবাসীর মনের অবস্থা, তার একাকিত্ব, তার আবেগ, তার কষ্ট, তার উদাসীনতা, তার নীরব কান্না এগুলো বুঝতে পারেন না। এই অনুভূতিগুলো অনুভব করাও তাদের পক্ষে সম্ভব না। প্রবাসীজীবনে প্রবাসীরাই এইগুলো বেশি অনুভব করেন।

 প্রবাসী আমাদের মনে অনেক কষ্ট। কারণ আমরা মা-বাবা, ভাইবোন সবাইকে ছেড়ে বন্দী জীবন কাটাই। সকালে উঠে কাজে যেতে হয় আর রাতে ফিরি। দুপুরে পলিথিন ব্যাগে রাখা খাবার খেতে হয়। কখনো ভালো থাকে আবার কখনো বা খাবার নষ্ট হয়ে যায়।

 প্রিয়জনের মৃত্যু সংবাদ শুনেও কিছু করার থাকে না। এমন হতভাগ্য আমরা। যখন কেউ একটু অসুস্থ হয় তখন পাশে কেউ থাকে না সেবা করার। অসুস্থকে রেখে সবাই চলে যায় সবার কাজে। কারও একটু সময় নাই তার পাশে থাকার।

 হায়রে প্রবাস! এই প্রবাসে এসে কতো আপন মানুষ হয়ে গেল পর। কতদিন চলে গেল, বোনের ভাইয়া ডাক শুনতে পাইনা। মা বলে না, আয় খোকা আমি নিজের হাতে তোকে খাইয়ে দিব। কতদিন আর কতদিন এভাবে কাটাব? জানি না। আমরা কবে এই দাসত্ব থেকে মুক্ত হব।

 তার পরও আমরা চাই আমাদের প্রিয়জনের মুখে একটু হাসি ফুটিয়ে তুলতে। রাত যায়, দিন যায়, থাকি পড়ে একা। রোজা যায়, ঈদ যায়, যায় কতো সুখের দিন, দেশের মানুষ কতো আনন্দ করে, আমরা তা দেখি প্রতিদিন। তবুও আমরা অনেক সুখ পাই যখন শুনতে পাই তোমরা আছ সুখে, আমরা ভালো আছি প্রবাসে জীবনের সব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে ভুলে।

 সকলের কাছে অনুরোধ, যারা দেশে আছেন আর বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়-সজন অথবা পুত্র-কন্যা কিংবা স্বামী-স্ত্রী যেই প্রবাসী হোক না কেন সব কিছুর মধ্য দিয়ে প্রবাসীদের সেই কষ্ট, অনভূতি, বেদনা, নীরব কান্না একটু বোঝার চেষ্টা করবেন। তাদেরকে যতখানি সম্ভব একাকিত্ব থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করবেন। তাদেরকে যতখানি সম্ভব নিজেদের কাছে রাখার চেষ্টা করবেন। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না আপনার বিশেষ এই অনুভূতি একজন প্রবাসীর জীবনে কতখানি প্রভাব ফেলবে। তার প্রবাস জীবন কতখানি আনন্দময় হয়ে উঠবে।

 আপনাদের বাবা, ভাই, স্বামী যেই প্রবাসে থাকুক না কেন, তাদেরকে একটু সুখ দিতে চেষ্টা করবেন এই বাংলাদেশ থেকে। আর আমার মনে হয় যখন কেউ তার প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলে একটু আনন্দবোধ করে তার কাছে কষ্টকে আর কষ্ট মনে হয় না।


দেশের সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পর্ক

 দেশের সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পর্ক গভীর হয়েও গভীর হতে পারে না, তার কারণ প্রবাসীদের কখনোই দেশ সম্মানের চোখে দেখে না বা তাদের মূল্যবোধের জায়গাটা দেয় না।


 কারণ প্রবাসীরা দেশের বাইরে থাকে বলে। প্রবাসীরা দেশের জন্য দেশ ছেড়ে যায় অন্য দেশে এটা বুঝলেও বোঝে না দেশের মানুষ। 

বেশ বড় বড় মানুষ বলে, প্রবাসীরা দেশ ছেড়েছে দেশের প্রতি তাদের মায়া, দেশের প্রতি তাদের টান নেই বলে, কিন্তু তারা এটুকু বোঝে না বা এটুকু বোঝার ক্ষমতা তাদের নেই যে,

 আমাদের দেশে কর্মসংস্থানেরর অভাবেই তারা দেশ ছেড়েছে, আমাদের দেশের মানুষজনদের ভালো রাখার জন্য তারা দেশ ছেড়েছে।

  দেশ প্রবাসীদের ভুলে গেলেও প্রবাসীরা কখনো দেশের কথা ভোলে না, তারা ভুলতে পারে না, কেননা সে সেদেশের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হতে পারে। 

সুতরাং বলা যায়, প্রবাসীদের সঙ্গে দেশে সম্পর্কটা ততটা বন্ধুত্বপূর্ণ না হলেও দেশের প্রতি প্রবাসীদের একটা টান আছেই শুরু থেকে।

 কেননা তারা তাদের আপনজনদের দেখা পাওয়ার জন্য যেখানেই যাক না কেন সবশেষে তাদের দেশেই ফিরে আসতে হয়, মা বলে ডাকার জন্য নিজের গ্রামটার মনোমুগ্ধকর প্রতিচ্ছবি তাকে বার বার দেখায় যেন তার টান, দেশের প্রতি তার মায়া আরো তীব্র হয়ে ওঠে তার কাছে।

  যে তীব্রতায় মিশে থাকে মা, মাটি, দেশ, মমতা অনেক কিছু। যা আসলে প্রবাসীদের মতো করে ভেতরে ভেতরে আর কেউ এত গভীর করে লালন করতে পারে না।

 পারবেই বা কেমন করে, প্রবাসীরা যে তাদের মায়া ত্যাগ করে অন্য দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারে না বা অর্জন করলেও তাদের বিবেক তাদের অর্জন করতে দেয় না, সবসময় তাদের ভেতরে ভেতরে বুকের মধ্যে বাজতে থাকে যে, এটা তোমার দেশ না, এটা তোমার দেশ না।

 তোমার দেশ বাংলাদেশ। তখন প্রবাসীরা নতুন করে সবকিছু দেখতে শুরু করে, যে দেখায় মিশে থাকে দেশের প্রতি গভীর মমতা।

  এই মমতাই তাদের আবার দেশে ফিরিয়ে আনে, প্রিয় মানুষের কাছে এসে তারা তাদের মুখ দেখে প্রবাসে থাকার তৃষ্ণা দূর করে। প্রবাসীরা আমাদের দেশের সম্পদ। 

তারা না থাকলে আমাদের দেশের উন্নতি এতটা চোখে পড়ত না, বাংলাদেশের নামটা অন্যান্য দেশের মতো এত স্পষ্ট করে পরিচিতি পেয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারত না বা তার কাজ সম্পর্কে, এই দেশ সম্পর্কে মানুষের কোনো ধারণা হতো না

বুধবার, ৪ আগস্ট, ২০২১

🙂প্রবাসীদের লাইফ থেকে আর বড় কি হতে পারে রূপকথাও হার মেনে যাবে

 কোন এক সময় আমিও ঐ রূপকথায় বিশ্বাসী ছিলাম

তাই সহজেই অনুমান করতে পারি।

একটানা ১৫ বছর দেশে যাবার সুযোগ হয় নি
অনেক চেষ্টা ও তদবির করার পর দেশের মাটিতে যাবার সৌভাগ্য হয়

এবং অনেক অজানা সত্য ও তথ্য জানতে পারি
যা অনেক সময় কষ্টের কারন হয়।

আবার কখনও হাসির খোরাক।
প্রবাসী বলতে একটা সুখী মানুষকে ইঙ্গিত করা হয়।

যাদের নেই কোন অভাব।
পকেট ভর্তি টাকা আর না চাইতে হাজার সুখের ফুলঝুরি আমাদের চারপাশে চরকার মত ঘোরতে থাকে।

চাহিবা মাত্র সবকিছু আমাদের সামনে এসে হাজির।
এই কথা গুলো যখন সবাই বলাবলি করে আমি একা একাই হাসতে বাধ্য হই।

না হেসে কি উপায় আছে? প্রবাসের বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করার পর এই কথা যখন কানে আসে তখন নিজেকে নিয়েই হাসি।

সত্য কথা গুলো বলতে ইচ্ছে হয় কিন্তু বলা হয় না কারন আমার এই বস্তা পঁচা কথা কেউ শুনবে না

তা আমি ভালো করেই জানি।
ভূ্ল করে যদি কারো কাছে প্রকাশ করা হয় তখন আমাদেরকে নিয়ে অন্য কথা বলা হয়,

রহস্যময় চোখ দিয়ে আমাদেরকে বার বার পরখ করা হয়।
দেশের মানুষের বিশ্বাস আমরা মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছি,
ফাঁকি দেবার জন্য কাহিনী রচনা আর কি।

দেশের মানুষের ধারনার সাথে আমাদের কোন মিল নেই যা আমার মতো প্রবাসীরা এক বাক্যে স্বীকার করবেন।

দেশের অধিকাংশ মানুষ আমাদেরকে স্বার্থ্পর হিসাবেই জানে।
আমরা নাকি আমাদেরকে নিয়েই ব্যাস্ত।
আমরা যদি সত্যি সত্যি স্বার্থ্পর হই তাহলে কেন বার বার দেশের মাটিতে ফিরে যাই?

কেন আমাদের চোখের জল শুকায় না?
কেন সবকিছু ভূ্লে প্রবাসে পড়ে থাকি?
আমাদেরকে বলা হয় স্বার্থ্পর!

হায়রে মানুষ একি হলো তোমাদের?
কেন এত বড় অপবাদ দাও?
লক্ষ লক্ষ প্রবাসীরা যদি স্বার্থ্পর হতো তাহলে এই বাংলার অন্য এক রূপধারন করতো😦

প্রবাসীদের মনে থাকা কষ্ট 🥺

 প্রবাসীর বুকে কষ্টের আগুন বিরহের আগুন,এই কষ্টের অসহ্য যন্ত্রনা প্রবাসী ছাড়া আর কেউ বুঝবে না।


আমাদের প্রতিদিনের কষ্ট কাহিনী অনেকেই জানে না,
বেশীর ভাগ সময় আমরা নিজেই প্রকাশ করতে সাচ্ছন্দ বোধ করি না কারন কষ্টের কথা যন্ত্রনার কথা প্রকাশ করাও এক ধরনের কষ্ট।

আমাদের বুকের যন্ত্রনা প্রতিটি ক্ষন মূহুর্তে অন্তরে অন্তরে অবলীলায় আমাদেরকে কাঁদিয়ে যায়।

আমাদের চোখের জল চোখেই শুকায়, কেউ আদর করে মুছে দেয় না। বেঁচে থাকার জন্য, ভালো থাকার অভিনয় করে নিজেই নিজের সাথে ছলনা করি।

দেশের পরিবার পরিজন যাহাতে ভালো থাকতে পারে এই চিন্তা মাথায় রেখেই আমাদেরকে অভিনয় করে হলেও সুখী মানুষের মত অভিনয় করতে হয়।

একজন প্রবাসী আরো একজন প্রবাসীর সাথে যেভাবে জীবনের দুঃখ যন্ত্রনা ভাগাভাগি করে আপন পরিবার পরিজনের সাথে এই ভাবে প্রান খোলে কথা বলতে পারে না।

কারন মাত্র একটা “পিছনে রেখে আসা মানুষ গুলো সুখে থাকুক আমাদের কষ্ট যেন ওদেরকে স্পর্শ করতে না পারে” দেশের মানুষ শুধুই আমাদের সুন্দর সাস্থ্য আর হাসি মাখটাই দেখে,

তাই আসল সত্যটা হাসি আর চোখে দেখা সুখের আবরনে ঢাকা পড়ে যায়।আর এক ধরনের ভূ্ল ধারনা বদ্ধমূ্ল হয়। প্রবাসের বাস্তব চিত্র আমি যেভাবে দেখেছি

তার সাথে দেশের মানুষের অনেক দ্বিমত থাকতে পারে, তবে যা দেখেছি তা কাগজ কলমের সাহায্যে আপনাদের কাছে প্রকাশ করার চেষ্টা করবো।

তির্থের কাকের মত আশায় চেয়ে থাকা প্রবাসী জীবনের এক একটি দিন যা কাউকে সহজে বুঝাতে পারি না।

প্রবাসে টাকা আছে তবে সুখ যে নেই তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। সবার ধারনা প্রবাস মানেই হলো সুখ আর সুখ।

বাস্তব সত্য হলো আমরা নামে মাত্র শুধু বেঁচে থাকি তবে বেঁচে থাকার স্বাদ আমাদের ভাগ্যে নেই। ভালোবাসাহীন জীবন নিয়ে বুক ভরা কষ্টের পাহাড় নিয়ে সুখের আশে পাশেও যাবার ভাগ্য হয় না আমাদের।

মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা বেঁচে নেই যাকে বলে জিন্দা লাস 🙂🙂🙂

প্রবাসীদের মনের কথা,, নাম্বার --২

 আমার জীবনে কেউ নেই তুমি ছাড়া আমার জীবনে কোন স্বপ্ন নেই তুমি ছাড়া আমার দুচোখ কিছুই খোঁজে না তোমায় ছাড়া আমি কিছু ভাবতে পারিনা তোমায় ছাড়া আমি কিছু লিখতে পারিনা তোমার নাম ছাড়া আমি কিছুই বুঝতে চাইনা তোমায় ছাড়া,,,,শুধু তুমি হবে আমার রাজ্যের রাণী 🥰🥰

প্রবাসীদের মনের কথা,, নাম্বার---১

 আমি চাইনা তুমি আমাকে বার বার বলো আমি তোমাকে ভালোবাসি. কিন্তু আমি চাইছি তুমি আমার জন্য একটু অপেক্ষা করো, আমি বলছিনা তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসবে কিন্তু আমি বলছি তুমি আমাকে একটু সুযোগ দিও তোমাকে মন উজাড় করে ভালোবাসতে 😊😊

মঙ্গলবার, ৩ আগস্ট, ২০২১

😭প্রভাস লাইফ আমার

প্রবাস মানেই সুখ 😀

পাঁচ বছর হলো প্রবাসে আছি 

না পারলাম বাব মা ভাই বোন এর  মুখ দেখতে

না পারলাম আত্মীয়-স্বজনের মুখ দেখতে

না পারলাম বন্ধু-বান্ধবের মুখ দেখতে 

ও আমি তো আগে ভাবি নি যে আমি আমাকে টাকার কাছে বিক্রি করে দিয়েছি তাহলে আর এত কিছু ভেবে কি করব 😭😭😭😭😭😭😭


  

🙃আমার নিজের হাতের লেখা গল্প প্রবাসে বসে

 প্রবাস মানে টাকা নয়, জীবন গড়ার শিক্কা,

 প্রবাস মানে উল্লাস নয়, অনুপম এক দীক্কা।


 প্রবাস মানে হাসি নয়, কষট চোখের জল,

 প্রবাস মানে ভাঈা বুকে জীবন গড়ার বল,।


 প্রবাস মানে প্রিয়তমার একটি রঙিন চিঠি,

 প্রবাস হলো মানুষের প্রতি ভালোবাসার সমপ্রীতি।


 প্রবাস হলো সবপ্ন পৃরণ ছোট ছোট আশা,

 প্রবাস হলো ভাইয়ের হাসি, বোনের ভালোবাসা,

 প্রবাস হলো বাবার বুকে সুখের শিহরণ।


 প্রবাস হলো মায়ের মুখে হাসির আবরিন,

 প্রবাস মানে সবাধীনতা পরের হাতে বনদি,

 প্রবাস মানে কাজের সাথে জীবনের এক সনধি।


 প্রবাস মানে শৃন্যতা প্রতি দিনই আসে,

 প্রবাস মানে অতীত সৃতি শুধুই চোখে ভাসে।


 প্রবাস মানে জীবন থেকে অনেক হারিয়ে যাওয়া,

 প্রবাস মানে আপন সৃজন হয়তো হবে না পাওয়া।


 প্রবাস মানে দেশানৃরী মমতা ঝেড়ে ফেলা,

 প্রবাস মানে ব্যথৃ জীবন শুধুই টাকার খেলা।


ইতি,,,, ইরফান ইসলাম কায়েছ 


কেমন হয়েছে তা অবশ্যই জানাবেন ভালো লাগলে একটা লাইক দিবেন 😊

😒প্রবাসী নারীরা যেমন আছে এক প্রবাসী নারীর গল্প

 >দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় অনন্য অবদান রাখছেন ১ কোটিরও বেশি প্রবাসী। এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। প্রবাসীদের অবদান স্বীকার করে, প্রস্তাবিত বাজেটে রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।


 অর্থাৎ, কোনো প্রবাসী কর্মী বিদেশ থেকে এক হাজার টাকা রেমিট্যান্স পাঠালে তিনি পাবেন ১ হাজার ২০ টাকা। এছাড়াও তাদেরকে আনা হবে বিমা সুবিধার আওতায়। নিঃসন্দেহে এ তো প্রবাসী কর্মীদের জন্য খুবই সুখের খবর।


 কিন্তু বিদেশ থেকে রক্ত পানি করে দেশে টাকা পাঠানো প্রবাসীরা কেমন আছেন সেখানে? বিশেষ করে যদি তিনি নারী হন?


  বাংলাদেশ থেকে যে সকল নারী বিদেশে শ্রম বিক্রি করতে যান, তারা এদেশের সবচে দুঃখী-দরিদ্র মানুষের প্রতিনিধি।


 সাধারণত ঋণমুক্তি, পরিবারের আর্থিক উন্নতি ও সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা পরিবার-পরিজন ছেড়ে দূরদেশে যাত্রা করেন। এসব অসহায় নারীর অধিকাংশই প্রবাসের উদ্দেশ্যে পা বাড়ান রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর খপ্পড়ে পড়ে আর্থিক ঋণদায়গ্রস্ত হয়ে।


 ঘাম বিক্রি করে হালাল উপার্জনের জন্য দূর দেশে পাড়ি জামানো এসব নারীর মধ্যে অধিকাংশই যৌন দাসীবৃত্তির শৃঙ্খলে বাঁধা পড়ছেন প্রবাসে। ফলে ক্রমাগত বিদেশ থেকে নির্যাতিতা নারীর ফিরে আসার সংখ্যা বাড়ছে।


  বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য বিদেশে যাওয়া নারীদের ৮০ শতাংশই যান সৌদি আরবে। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর নির্যাতন ও কাজের নিরাপদ পরিবেশের অভাবে অন্তত ১ হাজার ৩৫৩ জন নারী সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন। এ বছর প্রথম তিন মাসে ফিরেছেন কমপক্ষে আরো ৬৩৬ জন নারী।


  তবে ফিরে আসা নারী কর্মীর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশিই হবে। কারণ, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে নিজ দায়িত্বে চলে যাওয়া প্রবাসী নারীদের তথ্য নেই ব্র্যাকের কাছে।


  বিগত কয়েক বছরে বিদেশে নারী শ্রমিক যাওয়ার হার বেড়েছে বহুগুণে। কারণ, মাত্র ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচে পাড়ি জমানো যাচ্ছে সিরিয়া, দুবাই, সিঙ্গাপুর, জর্ডান, মরিশাস, ওমান, লেবানন, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে।


  কিন্তু বাংলাদেশ থেকে নারী শ্রমিকেরা যত সহজে বিদেশে যাচ্ছেন, ততোটাই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন সেখানে। দেশি-বিদেশি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া নারী শ্রমিকদের প্রায় সবারই বিদেশে পৌছানোর সাথে সাথে পাসপোর্ট ও ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে নেয় সেখানের মনিবেরা।


 বাধ্য করে বন্দী জীবন যাপনে। এমনকি দেশে পরিবারের সদস্যদের সাথেও স্বাধীনভাবে যোগাযোগ করতে দেয়া হয় না। অধিকাংশই চুক্তি অনুযায়ী মজুরি পান না। উল্টো শিকার হচ্ছেন শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের।


 এসব বর্বর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অসহায় নারী দেশে ফিরতে চাইলে তাঁর পরিবারের কাছে রিক্রুটিং এজেন্সি ও দালালদের মুক্তিপণ দাবির মতো ঘটনাও ঘটছে।


  ‘এক দশকে বাংলাদেশের নারী অভিবাসন : অর্জন, চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা’ শীর্ষক ২০১৬ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, ২৬৪ জন নির্যাতিতা প্রবাসী শ্রমিকের মধ্যে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩১.৩৩ শতাংশ নারী।


 যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৩.২৫ শতাংশ এবং মৌখিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৩.২১ শতাংশ। এছাড়া কোনো বেতন পাননি ১৫.২৬ শতাংশ নারী। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগেছেন ৪৩.৩৭ শতাংশ। 


এসব কর্মীর ১৭.৫০ শতাংশ তালাকপ্রাপ্ত, বিচ্ছিন্ন ও স্বামী পরিত্যক্তা এবং ৬.৬০ শতাংশ বিধবা। ৬৬. ৯০ শতাংশ বিবাহিত এবং ৯ শতাংশ অবিবাহিত।


  প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, ২০১৭-১৮ সালে ২ হাজার ৯০৬ জন নারী কর্মী নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়ে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অবসি’ত বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফহোমে আশ্রয় নেন।


  নির্যাতিতা শ্রমিকরা দেশে ফিরে আবার অন্য ধরণের সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছেন। সামাজিকভাবেও হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছে এসব নারী। হচ্ছেন তালাকপ্রাপ্তা। তাহলে কোথায় দাঁড়াবে এই অসহায় মানুষগুলো! তাদের শরীর ও মন নির্যাতনের চিহ্নে জর্জর।


  বিভিন্ন সূত্র হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২০১৫ সালের চুক্তির পর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে এ পর্যন্ত প্রায় ২লক্ষাধিক গৃহকর্মী গেছেন। এরমধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন প্রায় ৬ হাজার গৃহকর্মী।


 এ বছরই ফিরে এসেছেন অন্তত ১ হাজার নারী গৃহকর্মী। চলতি বছরের মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত শুধু সৌদি আরবের রিয়াদের ইমিগ্রেশন ক্যাম্প থেকে দেশে ফিরেছেন ৩৬০ জন নারী গৃহকর্মী। আর ফেরত আসা প্রত্যেক নারীই কম বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।


  ২০১১ সালে ফিলিপাইন প্রবাসী নারী শ্রমিকদের পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য সৌদি আরবে একটা সংসদীয় প্রতিনিধিদল পাঠায়। ফিরে এসে তারা সংসদকে জানিয়েছিলেন, আমরা আমাদের মেয়েদের ধর্ষিত বা নির্যাতিত হওয়ার জন্য সৌদি আরবে বিক্রি করতে পারি না।


  এই যখন অবস্থা তখন নিশ্চয় সময় এসেছে, এদেশের প্রবাসী নারী শ্রমিকদেরকে নিয়ে ভাবার। বিদেশে তাদের শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও সম্ভ্রমের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে রাষ্ট্রের মনোযোগী হওয়ার।


 আমাদের শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যে সকল দেশ ব্যর্থ হবে কিংবা যাদের আন্তরিকতার অভাব থাকবে অথবা যারা আমাদের নারী শ্রমিকদেরকে 'যৌনদাসী' ভেবে 'আমদানি' করতে চায় তাদের ব্যাপারে রাষ্ট্রকে অবশ্যই অনমনীয় হতে হবে।



কারো কাছে লাইক-কমেন্ট পাবোনা জানি প্রবাসীদেরকে কেউ পছন্দ করেনা 😥😢😢

😥এক গৃহবধুর অন্ধকার জীবনের গল্প

 ভাসুর ও জাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চাঁদা দাবি করেছিলেন। সে দায়েই এখন কারাগারে বন্দি আছেন কানাডা প্রবাসী সিদরাতুল মুনতাহা চৌধুরী।


 তবে চাঁদাবাজি নয় মুনতাহা চৌধুরী এখন আলোচনায় তার উদ্দাম ও বেপরোয়া জীবনাচারের কারণে। পুলিশের খাঁচায় বন্দি হওয়ার পর একে একে বেরিয়ে আসছে তার অন্ধকার জীবনের ‘ফুল স্টোরি’। পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া গল্পের বাইরেও আরও অনেক কিছু বেরিয়ে এসেছে অনুসন্ধানে।


  সিদরাতুল মুনতাহা চৌধুরী। ডাক নাম ফুলি। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার কাদিমল্লিক গ্রামের মইজ উদ্দিন চৌধুরীর মেয়ে। পড়ালেখা করেছেন সিলেটের ব্লু বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজে। 


এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার আগেই ২০০৭ সালের ১৫ই ডিসেম্বর পরিবারের পছন্দে মায়ের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে কানাডাপ্রবাসী মাহবুব উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। মাহবুব চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি গোলাপগঞ্জ উপজেলার রফিপুর গ্রামে। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে কানাডায় চলে যান ফুলি। প্রথম প্রথম ভালই চলছিল। প্রবাসের রঙিন জীবন রঙ ধরায় ফুলির মনেও। একটু একটু করে আলো-আঁধারির ছায়া পড়ে তার মাঝে। ফুলি বেপরোয়া হতে থাকেন পোশাকে-আশাকে, চলনে-বলনে। খরচ বেড়ে যায় তার। স্বামীর কাছে আবদার কেবল বাড়তে থাকে। হিসাব মেলাতে হিমশিম খান কানাডার ‘মণিমহল’ রেস্টুরেন্টে কর্মরত মাহবুব চৌধুরী।


  কিছুই বুঝতে চান না ফুলি। বিলাসী জীবনের খরচ মেটাতে তার শুধু টাকা চাই। টাকার জন্য বেপরোয়া ফুলি জালিয়াতির আশ্রয় নেন। স্বামীর ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ৮০ হাজার ডলার আত্মসাৎ করেন। তার স্বামী যে রেস্টুরেন্টে কাজ করেন সেই মণিমহলের মালিক দেওয়ান শাহীনেরও ৬০০০ ডলার কবজায় নেন চেক জালিয়াতি করে। স্ত্রীকে নিয়ে যেন আর পারছিলেন না মাহবুব চৌধুরী। একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে সিলেট নগরীর উপশহরস্থ ফ্ল্যাট বিক্রির ‘দায়িত্ব’ দিয়ে দেশে পাঠান স্ত্রীকে। তবে মাহবুব চৌধুরী ভাবতে পারেননি দেশে এসে আরও ভয়াবহ ‘কীর্তিগাথা’র জন্ম দেবেন ফুলি।


  ৫ বছরের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ফুলি দেশে আসেন গত ১৫ই মার্চ। সেদিন ছিল মাহবুব চৌধুরীর মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী। দেশে ফিরে ফুলি ওঠেন নগরীর ফাজিল চিশতে তার পিতার বাসায়। কানাডা থেকে মনে যে রঙ লাগিয়ে এসেছিলেন তার প্রলেপ থেকে যায় দেশে আসার পরও। দেশে ফিরেও বেপরোয়া চালেই চলতে থাকেন। বাইরে বাইরেই সময় কাটতো বেশি। কেউ কৈফিয়ৎ চাইলে বলতেন ‘ফ্ল্যাট বিক্রি’র চেষ্টার জন্যই বাইরে থাকতে হচ্ছে। প্রতিদিনই বাসা থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে বের হতেন। হাতের টাকা শেষ করে তবেই ফিরতেন বাসায়।


  ঘোরাঘুরি, কেনাকাটা, খাওয়া-দাওয়া, আনন্দফুর্তি ফুলির জীবন যেন এমনই। কেনাকাটার সূত্রে পরিচয় হয় অলঙ্কার প্রতিষ্ঠান জেমস গ্যালারির নয়া সড়ক শাখায় কর্মরত দিলদার হোসেন ওরফে নাজমুলের সঙ্গে। বিনিময় হয় দু’জনের মোবাইল ফোন নাম্বার। সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার রেহানউল্লার ছেলে নাজমুলের কাছে ফুলি পরিচিত হন ‘খুশি’ নামে। পরিচয়ের পরদিনই মেন্দিবাগের একটি হোটেলে লাঞ্চ করেন তারা। ফুলি প্রথম দিকে নিজের বিবাহিত পরিচয়টি আড়াল করেন নাজমুলের কাছে। তবে এক সময় নাজমুল জানতে পারেন বিষয়টি। ফুলি বিষয়টি স্বীকার করেন, তবে আংশিক। বলেন, এক বছর আগেই ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে ‘আগের স্বামী’র সঙ্গে। আগের বৃত্তান্ত জানাজানির পরও সম্পর্কে ভাটা পড়েনি এতটুকু। বরং আরও গভীর হতে থাকে সে সম্পর্ক। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তারা।


  ডিভোর্সের কাগজ ছাড়া কাজী বিয়ে পড়াতে রাজি না হলে ২৫শে জুন মৌলভী ডেকে একে অপরকে ‘কবুল’ করেন তারা। ফুলির বেপরোয়া জীবন আরও গতি পায়। পার্টি, মদ, ড্যান্স সব কিছুরই স্বাদ নিতে থাকেন তারা। নাজমুলের মাধ্যমে ফুলির পরিচয় হয় জুবায়ের, লিজা, উজ্জ্বল, কুটি, রিপন আলীর সঙ্গে। এদের সবার নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নেন ফুলি। ফুলির নেতৃত্বে অপরাধে জড়িয়ে পড়ে এ বাহিনী। এমনকি ফুলিকে কেন্দ্র করে সাগরদীঘির পারের জনৈক ফাহাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে নাজমুল বাহিনী। এই ফাহাদের বাসাতেই ভাড়া থাকতেন ফুলি-নাজমুল।


  ফুলির বিলাসী জীবন টানতে কেবলই টাকার প্রয়োজন। তাই নানা ধরনের প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে তারা। ভিসা প্রসেসিংয়ের কথা বলে নগরীর সুবিদবাজারের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। চাঁদা চেয়ে ফোন করে সুবিদবাজারেরই আরও এক ব্যবসায়ীর কাছে। এতেও মন ভরছিল না ফুলির। মোটা একটা ‘দান’ মারতে নাজমুলের হাতে নিজের ভাসুর বেলাল উদ্দিন চৌধুরী ও জা মাহবুবা নোমান চৌধুরীর ফোন নাম্বার তুলে দেন। তবে সাহস করতে পারছিলেন না নাজমুল। নানাভাবে বোঝাতে চেষ্টা করেন ফুলিকে। কিন্তু কিছুতেই তাকে বোঝানো যাচ্ছিল না। উল্টো আত্মহত্যার ভয় দেখিয়ে ফুলিই চাপে ফেলেন নাজমুলকে।


  ২৮শে আগস্ট ২০১৪। সেদিন ছিল দিলদার হোসেন নাজমুলের জন্মদিন। ফুলি নাজমুলের বন্ধুদের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে নগরীর নয়া সড়কস্থ সিলভার প্যালেস রেস্টুরেন্টে একটি পার্টির আয়োজন করেন। পার্টি শেষে সন্ধ্যায় সবাই মিলে রোজভিউ হোটেলে নেশার আসরে যোগ দেন।


 মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নাজমুল উল্লেখ করেন, নেশার ফাঁকে বারবার ফুলি তার ভাসুর বেলাল উদ্দিন চৌধুরী ও জা মাহবুবা নোমান চৌধুরীর কাছে চাঁদা চেয়ে ফোন দিতে চাপ দেন। দু’জনের মাঝে এ নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে চাঁদা চেয়ে ফোন দেন নাজমুল। মাহবুবা নোমানের কাছে ফোন করে দাবি করেন ১০ লাখ টাকা। হুমকি দেন টাকা না দিলে অপহরণ করে হত্যা করা হবে তাকে ও তার ছেলেকে। ফোনে টাকা দাবি না করলে হয়তো জানা হতো না ফুলির পেছনের গল্পগুলো।


  ফোন পেয়ে আতঙ্ক ভর করে মাহবুবা নোমানের মনে। নিজের চেয়ে ছেলের জন্য বেশি ভয় তার। হুমকি অব্যাহত থাকায় বন্ধ করে দেন ছেলের স্কুল যাওয়া। শুধু মাহবুবা নোমানের কাছে নয়, ফোন যায় কানাডায় তার স্বামী বেলাল চৌধুরীর কাছেও। হুমকি দেয়া হয় দেশে এলে তাকেও হত্যা করা হবে। চাঁদা দাবি করা হয় একই অঙ্ক ১০ লাখ টাকা। আতঙ্কিত মাহবুবা নোমান চৌধুরী জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কোতোয়ালি থানায় দু’টো সাধারণ ডায়েরি করেন। প্রথমটি ২৮শে আগস্ট (নং ১৬৯১)। এক মাস অপেক্ষা করে ফল না পেয়ে দ্বিতীয় সাধারণ ডায়েরিটি করেন ২৬শে সেপ্টেম্বর (নং ২১০৩)। প্রতিকার মেলেনি এর পরও। ফোনে হুমকি অব্যাহতই থাকে। নিরুপায় হয়ে শরণাপন্ন হন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের। ইতিমধ্যে বিষয়টি জানান কানাডা দূতাবাসে, উদ্বিগ্ন হয় দূতাবাসও।


  দূতাবাসের পক্ষ থেকে কনসুলার অফিসার ডুরেন রহমান নিরাপত্তা চেয়ে যোগাযোগ করেন পুলিশের সঙ্গে। এক পর্যায়ে তদন্তে নামেন গোয়েন্দারা। খুঁজে বের করেন পেছনের হোতাদের। বেরিয়ে আসে এমন গল্প যা কারও ধারণাতেই ছিল না। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ফুলি শুধু নাজমুলের সঙ্গেই নয় সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন আরও অনেকের সঙ্গে।


  নাজমুলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা অবস্থাতেই নাজমুলের বন্ধু রিপনের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন ফুলি। এ নিয়ে নাজমুলের সঙ্গে তার টানাপড়েনও তৈরি হয়। ফুলির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় নাজমুলের। রিপন আরও কাছে আসেন ফুলির। গত ১৩ই নভেম্বর মালাবদল করেন ফুলি ও রিপন। সে বৃত্তান্তও সবার কাছে অজানা থাকে। হঠাৎ একদিন মেয়ের ব্যাগ খুললে এ বিয়ের কাবিন দেখতে পান ফুলির মা রতœা খানম চৌধুরী। চমকে ওঠেন, মেয়ে যে বখে যাচ্ছে তা টের পেয়েছিলেন। তবে এতটা যে ঘটে গেছে কল্পনাতেও ছিল না। ফোন দেন রিপনের কাছে। রিপন দৃঢ় কণ্ঠে স্বীকার করেন ফুলি তার স্ত্রী। আদালতে নাজমুল যে জবানবন্দি দিয়েছেন তাতে জানা যায়, ২০১৩ সালে আরিফ নামে ঢাকার বাসিন্দা এক যুবকের সঙ্গেও বিয়ে হয়েছে ফুলির।


  বল্গাহীন জীবনাচারের কুশীলবরা এখন পুলিশের খাঁচায়। লাল দালানে বন্দি রঙিন জীবনের নায়ক-নায়িকারা। সিলেট মেট্রো পুলিশের গোয়েন্দা জালেই শেষমেষ ধরা পড়ে তারা।


 আপনাদের কাছে হাতজোড় করে বলছি গল্পটি ভাল লাগলে লাইক এবং কমেন্ট করেন আপনারা প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ🙏 

🙂একটি হৃদয় ভাঙ্গার গল্প প্রবাসী

 পড়ুন এক টাকার মেশিনের গল্প , জিনি আত্মহত্যার আগে লিখে গেলেন নিজের জীবনের কাহিনী , যাদের সন্তান বা স্বামী বিদেশে থাকেন তারা অবশ্যই দেখবেন কত কষ্ট করে আপনাদের জন্য মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান কে একটু ভাল ভাবে রাখার জন্য, ফ্যামিলি মানুষ গুলোর একটু সুখের জন্য সব মায়া ত্যাগ করে প্রবাসে আসছিল। জানিনাহ, এবার কার সুখের আসায় দুনিয়ার মায়াও ত্যাগ করে পৃথিবী থেকে চলে গেছেন।


  বাড়ি ছিলো রাজশাহীর চাপাইনবাবগঞ্জে।উনার সম্পর্কে যতোটুকু জেনেছি, মানুষ টা অনেক সহজ-সরল টাইপের ছিলেন,সবসময়ই সোজাসাপ্টা কথা বলতে পছন্দ করতেন,নিজের মনের কথাটা ঠিকমতো প্রকাশ করতেও পারতেন না, সিগারেট কিংবা কোন বাজে অভ্যাসও ছিলোনা। নয় মাস আগেই ছুটিতে দেশে গিয়ে বিয়ে করে এসেছিলেন। বাড়িতে মা-বাবা, ছোট ভাই-বোন, স্ত্রী নিয়ে ই উনার যৌথ ফ্যামিলি ছিলো।


  উনার রুমমেট দের কাছ থেকে জানলাম, কিছুদিন থেকেই নাকি উনি বেশ উদাস আর মন খারাপ করে থাকত।ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করত না, রাতে সবাই ঘুমাইত ওনি বেডে শুয়ে কেঁদে বালিশ ভিজাইতো।


  সুইসাইড করার কারণ টা আর শেষ ইচ্ছে টা মরার আগে চিরকুটে লিখে গেছিলেন.. “মাস দুয়েক আগে উনার ভিসা নিয়ে একটু প্রবলেম হয়েছিল, দুইমাস ধরে বাড়িতে কোন টাকা পাঠাতে পারেনি; সেলারীর সব টাকাই ভিসার ঝামেলা মিটাইতে শেষ হয়ে গেছিলো।


  ফ্যামিলির সবাই ভাবছিল, ওনি টাকা টা বৌয়ের পারসোনাল একাউন্টে পাঠাচ্ছে, বাড়িতে ফোন দিলে সবাই উনার সাথে উল্টাপাল্টা কথা বলত, কল কেঁটে ফোন বন্ধ করে রাখত, শেষ পনেরদিন মা উনার সাথে কথা বলেনি।


 বৌ ভাবছে টাকা বাজে পথে খরচ করতেছে, বৌও এসব নিয়ে ঝগড়া করে বাপের বাড়ি চলে গেছিলো। উনার সমস্যা টা কাউকে বুঝাতে পারেনি, কিংবা কষ্ট টা কেউ বুঝেনি, ঘরের বৌ এমন কি গর্ভধারিনী মা ও না।। ফ্যামিলির কাছ থেকে পাওয়া আঘাত টা সহ্য করতে না পেরেই পৃথিবীর মায়াও ত্যাগ করে নিজ রুমে ফাঁসি দিছিলেন।


  চিরকুটে লেখা শেষ ইচ্ছে টা ছিলো, “লাশ টা যাতে দেশে না পাঠানো হয়, এখানেই দাফন কাফনের ব্যবস্থা করা হয়।” …শেষ ইচ্ছে টা হয়ত পূরণ করা সম্ভব হবেনা,কোম্পানি থেকে লাশ টা দেশে পাঠিয়ে দিবে। তবে কি পরিমাণ আঘাত আর কতোটুকু কষ্ট পাইলে একটা মানুষ মরার আগে এরকম আবদার করতে পারে??


  ভাই সিরিয়াসলি একটা কথা বলি, প্রবাসী রা ভোগ- বিলাসিতা কিংবা নিজেদের সুখের জন্য বিদেশ আসেনি, ফ্যামিলির কথা চিন্তা করেই এসেছে।


  দেশে যারা আছে তারা মনে করে প্রবাসী রা অনেক সুখে আছি, টাকার পাহাড়ে কিংবা টাকার গাছ নিয়ে বসে আছে, ছিঁড়ে ছিঁড়ে শুধু টাকা পাঠাবো। কিন্তু আমরাতো বুঝি মাস শেষে টাকা পাঠানোর জন্যে কি পরিমাণ কষ্ট করতে হয়।


  আপনার ভাই, ছেলে, স্বামী, বাবার প্রবাস লাইফের একদিনের কষ্ট যদি কখনো দেখতেন, সাথে সাথে বলতেন বাড়ি তে চলে আসতে প্রয়োজনে না খেয়ে থাকব, তবুও প্রবাসে থাকতে হবেনা।


  প্রবাসীদের কষ্ট বুঝতে বেশি কিছু করতে হবেনা, “ভোররাত চার টায় ঘুম থেকে উঠে 45° সেলসিয়াস তাপমাত্রার সারাদিন রৌদে পুঁড়ে 15/16 ঘন্টা ডিউটি করে রাত নয় টায় রুমে গিয়ে কিচেনে গরম পাতিলের ছ্যাঁকা খেয়ে রান্না করার কষ্ট টা একটু আন্দাজ করুন।


  অবশ্যই, দেশে থেকে আপনারা কি করে বুঝবেন/ দেখবেন আর বলবেন। আপনারা তো প্রবাসীদের রক্তশুষে ভালোই মৌজে আছেন। আমরা যারাই প্রবাসে আছি, আমরা তো দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদী, হাজারো কষ্ট বুকে নিয়েও বলি অনেক ভাল আছি। কোন দিন বুঝতে দেইনি আপনার সুখের জন্য আমাদের জীবনের মূল্যবান দিন গুলোকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছি।


  দেশের মানুষ গুলোর কাছে একটাই অনুরোধ, বিদেশে আপনার ফ্যামিলির যেই থাকুন বাবা, ভাই, স্বামী, বন্ধু, অন্যকোন সম্পর্কের আত্মীয় হোক তাদের সাথে একটু ভাল ব্যবহার করেন, তাদেরকে একটু ফোনে সময় দেন,


 একটু ভালো ভাবে কথৃ বলুন; তারা আপনাদের কাছে এরচেয়ে বেশি কিছু আশাও করেনা।কোনরকম মেন্টালি পেইন দিবেন না, কাছের মানুষের ছোট একটা কথাও ধনুকের তীরের মতো বুকে বিঁধে।সেসব ব্যথায় মেন্টালি সার্পোট কিংবা সান্ত্বনা দেওয়ার মতো এখানে ওনাদের কেউ নাই, সবরকম পেইন একাই নিতে হয়।


  প্রবাসী ভাই-বন্ধু, দেশ থেকে যে যাই বলুক না কেন, মনে কিছু নিবেন না। সামর্থ্য যতটুকু আছে ফ্যামিলির জন্য ততটুকুই করবেন।কোনরকম আঘাতে ভেঙ্গে পড়বেন না,আর কোন রেমিটেন্স যোদ্ধ/ সহযোদ্ধা কে এভাবে হারাতে চাই না। 


এতক্ষণ যেহেতু গল্পটি পড়ে ফেলেছেন তাহলে একটি লাইক একটি কমেন্ট করে যান প্লিজ 🙏

🤔দেশের সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পর্ক

 দেশের সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পর্ক গভীর হয়েও গভীর হতে পারে না, তার কারণ প্রবাসীদের কখনোই দেশ সম্মানের চোখে দেখে না বা তাদের মূল্যবোধের জায়গাটা দেয় না।


 কারণ প্রবাসীরা দেশের বাইরে থাকে বলে। প্রবাসীরা দেশের জন্য দেশ ছেড়ে যায় অন্য দেশে এটা বুঝলেও বোঝে না দেশের মানুষ। 


বেশ বড় বড় মানুষ বলে, প্রবাসীরা দেশ ছেড়েছে দেশের প্রতি তাদের মায়া, দেশের প্রতি তাদের টান নেই বলে, কিন্তু তারা এটুকু বোঝে না বা এটুকু বোঝার ক্ষমতা তাদের নেই যে,


 আমাদের দেশে কর্মসংস্থানেরর অভাবেই তারা দেশ ছেড়েছে, আমাদের দেশের মানুষজনদের ভালো রাখার জন্য তারা দেশ ছেড়েছে।


  দেশ প্রবাসীদের ভুলে গেলেও প্রবাসীরা কখনো দেশের কথা ভোলে না, তারা ভুলতে পারে না, কেননা সে সেদেশের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হতে পারে। 


সুতরাং বলা যায়, প্রবাসীদের সঙ্গে দেশে সম্পর্কটা ততটা বন্ধুত্বপূর্ণ না হলেও দেশের প্রতি প্রবাসীদের একটা টান আছেই শুরু থেকে।


 কেননা তারা তাদের আপনজনদের দেখা পাওয়ার জন্য যেখানেই যাক না কেন সবশেষে তাদের দেশেই ফিরে আসতে হয়, মা বলে ডাকার জন্য নিজের গ্রামটার মনোমুগ্ধকর প্রতিচ্ছবি তাকে বার বার দেখায় যেন তার টান, দেশের প্রতি তার মায়া আরো তীব্র হয়ে ওঠে তার কাছে।


  যে তীব্রতায় মিশে থাকে মা, মাটি, দেশ, মমতা অনেক কিছু। যা আসলে প্রবাসীদের মতো করে ভেতরে ভেতরে আর কেউ এত গভীর করে লালন করতে পারে না।


 পারবেই বা কেমন করে, প্রবাসীরা যে তাদের মায়া ত্যাগ করে অন্য দেশের নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারে না বা অর্জন করলেও তাদের বিবেক তাদের অর্জন করতে দেয় না, সবসময় তাদের ভেতরে ভেতরে বুকের মধ্যে বাজতে থাকে যে, এটা তোমার দেশ না, এটা তোমার দেশ না।


 তোমার দেশ বাংলাদেশ। তখন প্রবাসীরা নতুন করে সবকিছু দেখতে শুরু করে, যে দেখায় মিশে থাকে দেশের প্রতি গভীর মমতা।


  এই মমতাই তাদের আবার দেশে ফিরিয়ে আনে, প্রিয় মানুষের কাছে এসে তারা তাদের মুখ দেখে প্রবাসে থাকার তৃষ্ণা দূর করে। প্রবাসীরা আমাদের দেশের সম্পদ। 


তারা না থাকলে আমাদের দেশের উন্নতি এতটা চোখে পড়ত না, বাংলাদেশের নামটা অন্যান্য দেশের মতো এত স্পষ্ট করে পরিচিতি পেয়ে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারত না বা তার কাজ সম্পর্কে, এই দেশ সম্পর্কে মানুষের কোনো ধারণা হতো না।


 


প্লিজ একটি লাইক একটি কমেন্ট করে যান 🙏

সোমবার, ২ আগস্ট, ২০২১

প্রবাসিদের চাওয়া পাওয়া 😙

 > আমরা কেন প্রবাসে থাকা মানুষটাকে কোনো মূল্যায়ন করছি না বা সম্মান দেখাচ্ছি না বা শ্রদ্ধাবোধের জায়গাটাও হারিয়ে ফেলেছি তা কেন।


 তা আমাদের সমাজব্যবস্থা, আমাদের দেশ এবং দেশের মানুষের কাছে প্রবাসীদের ছোট করে রেখেছে তার কারণ রাজনৈতিক ইস্যু। এই ইস্যু দ্বারা দেশের প্রত্যেকটা মানুষ বিভক্ত হলেও প্রবাসীরা কিন্তু কখনোই বিভক্ত হওয়ার কথা চিন্তা করে না। 


কারণ তারা বোঝে যে, দেশটা তো আমার, দেশের মানুষগুলো তো আমার, দেশের মানুষগুলোর এই সুখ-দুঃখ এগুলোও তো আমার। তাহলে কেন দেশ থেকে বিভক্ত হতে যাব। এই বিভক্ত হওয়ার জন্য তো আমাদের প্রবাসে আসা নয়, এই বিভক্ত হওয়ার জন্য তো আমাদের এই রাত-দিন পরিশ্রম করে যাওয়া নয়।


  এই বিভক্তের পেছনে লুকিয়ে আছে একটা স্বার্থ। যে স্বার্থটা আসলে দেশের মানুষ বুঝলেও প্রবাসীরা তা বোঝে না, তাদের একটাই চিন্তা যে, আমার দেশের মানুষগুলোকে আমারই ভালো রাখতে হবে।


 আমরা আসলে টের পাই না বা বুঝতে পারি না আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের প্রবাসীদের ভূমিকা কতটুকু। প্রবাসীরা এখানে কতটুকু দায়িত্ব পালন করছে বা কি করে যাচ্ছে।


 তা আমরা দেখতে পাই গুটিকয়েক মানুষের কথা চিন্তা করলে যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান যে মানুষগুলোর জন্য একজন মানুষ আসলে বিদেশে যায়। আমাদের বুঝতে একটু কষ্ট হয় যে প্রবাসীরা বিদেশ গেলে কেন দেশে আসে না বা দেশে আসার কথা চিন্তা করে না, না করার কারণ তারা দেশে ফিরলে তাদের আপন মানুষগুলোর যে সুখটা আছে বিদেশ থাকাবস্থায়।


  তাদের সে সুখ থাকবে না দেশে ফিরলে। তাদের জন্যই ওদের বিদেশ থাকা, দেশে না ফেরা। দেশের সঙ্গে, দেশের মানুষজনদের সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পর্কের কথা চিন্তা করলে আমরা দেখতে পাই দেশের প্রতি,


 দেশের মানুষজনদের প্রতি প্রবাসীদের যে টান-সে টান দেশের মানুষদের নেই। কেননা তারা তাদের কাছে থাকা মাতৃভূমিকে অনুভব করতে পারছে না যেমনটা পারে দেশের বাইরে থাকা প্রবাসীরা।


 দেশের মাটির গন্ধ পর্যন্তও তারা শুকতে পায় কেননা তাদের কাজের মধ্যে থাকে দেশকে উদ্দেশ্য করে খেটে খাওয়া মানুষদের কথা, আপন মানুষগুলোর হাসিমুখের জন্য অপেক্ষা এবং তার আরো কাছের যেমন স্ত্রী-সন্তান তাদের ভালো থাকার কথা।


  সন্তানের পড়াশোনার খরচ, বৃদ্ধ মা-বাবার ওষুধের খরচ সবকিছুর কথাই যেন তার মাথায় কেউ গেঁথে রেখেছে যে, তোমার টাকার জন্য তোমার সন্তান স্কুলের বেতন দিতে পারছে না,


 তোমার বৃদ্ধ মা-বাবা ওষুধ কিনতে পারছে না এই কথাগুলো যেন তার কানে বাজতেই থাকে। যার জন্য সে তার কাজ ছাড়াও বাড়তি কাজ করে যেন তারা হতাশ না হয় বা যত টাকা খরচ করে ঋণ নিয়ে সে বিদেশ এসেছে তা পরিশোধ করার আগ পর্যন্ত তার যেন কোনো নিদ্রা নেই।


 সে কাজ করতেই থাকে তার মতো করে। সেই কাজ করার মধ্য দিয়েই মনে পড়ে দেশের কথা, দেশের মানুষজনদের কথা, আরো মনে পড়ে চেনা পরিচিত কিংবা অচেনা অপরিচিত দেশের পথ-ঘাটের কথা।


প্রবাসীদের ঈদ 😐😐😐

 ঈদ মানে খুশি ঈদ মানে আনন্দ। এই কথা সবাই মানলেও প্রবাসীদের জীবনে এই কথার বাস্তবতা খুজে পাওয়া মুশকিল। প্রবাসীদের ঈদটা একটু অন্য রকম। প্রবাসে অনেকেই আছেন যাদের জন্য ঈদের দিনটা অত্যান্ত কষ্টের। মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হচ্ছে ঈদ। এই ঈদকে নিয়ে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন আশা আকাংখা আর প্রস্তুতির কমতি থাকেনা। ঈদ আসে ঈদ যায় কিন্তু প্রবাসী শ্রমিকদের কষ্ট এতটুকুও কমেনা।


  ফজরের আযানের পর দল বেধে ছুটা-ছুটি,দলবেধে পুকুরে ঘোসল শেষ করে সামান্য মিষ্টি মুখ করে নতুন জামা কাপড় পরে ঈদগাহ মাঠে যাওয়া এখন শুধুই স্মৃতি। এখন আর নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় পাশের বাড়ির কেউ ঢাক দিয়ে বলেনা  সেমাই খেয়ে যাও। এখন আর নতুন জামা পরে সালাম করলে কেউ নতুন টাকার নোটগুলো হাতে উঠিয়ে দেয়না। এসবের একটাই কারন  আর তা হলো আমি এখন বাংলাদেশ থেকে অনেক অনেক দুরে। সৌদি আরবের মরু প্রান্তরে।


  এখানে ঈদ মানে শুন্যতা, ঈদ মানে না পাওয়ার কষ্ট। পবিবার পরিজন ছাড়া ঈদ যে কত কষ্ট তা একমাত্র প্রবাসীরাই বুঝে। সকাল হলেই ঈদ এখনো আছি ডিউটিতে। শেষ রাতে ঘোসল সেরে সন্ধ্যা রাতের বাশী বাত এর বাশি তরকারী খেয়ে ঈদের নামাজে যাওয়ার প্রস্তুতি। পুর্বাকাশে সুর্য মামার দেখা পাওয়ার সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায় ঈদের নামাজ । এর মাঝে আসতে শুরু করবে দেশ থেকে আপনজনদের মিসকল আর খুদে বার্তা।


  ঈদের প্রস্তুতি জানার জন্য ফোন করেছিলাম শারমিন কে। ভালো-মন্দ জিজ্ঞেস করতেই পাশ থেকে আমার দুই বছরের ছোট মেয়েটি কি যেন বলতে চাইছে । তার মাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম সে বুঝাতে চেয়েছে  গতকাল বাজার থেকে আমার জন্য লাল টকটকে জামা আর বাঁশিওয়ালা জুতা এনেদিয়েছে। আর সেটা তার খুব পছন্দ হয়েছে। ছোট্র মেয়েটার অস্পষ্ট কথাগুলো শুনে মনটা আরো খারাপ হয়ে গেলো ।


 মা-মেয়ে দুজনের কথা শুনছিলাম আর চোখের পানি মুছতেছিলাম টিস্যু দিয়ে ।সবকিছু খুলামেলা না বললেও এতুকুটু বুঝতে পেরেছি ঈদে খরচ করার জন্য যে টাকা পাঠিয়েছি তা বর্তমান সময়ের জন্য যথেষ্ট নয়। বললাম আজকালের মধ্যেই আরো কিছু টাকা পাঠিয়ে দিবো টেশন করবেন না। জানলাম সবার জন্য কেনাকাটা শেষ। 


এখন শুধু অপেক্ষা ঈদের দিনটীর জন্য। এতূকু জেনে ভালো লাগলো আমাদেরর কষ্টের উপার্জিত টাকা দিয়ে আমাদের পরিবার সুখে -শান্তিতে ঈদ করতে পারছে। এটুকুই প্রবাসীদের স্বার্থকতা।


  ঈদের নামাজ আর দেশে  ফোন করার পর  কষ্টের তীর্বতাটাকে আরো ভারী করে ঘুমানোর প্রস্তুতি। বুকফাটা কষ্ট আর যন্ত্রনাটাকে  বুকে নিয়ে বিছানায় যেয়ে চোখের পানিতে বালিশ বিজিয়ে একটু ঘুমানোর চেষ্টা যেন কষ্টের ভারটা একটু কমে।


 আর তাতেই দুপুর ঘনিয়ে পুর্বের সুর্যটা পশ্চিমে হেলতে শুরু করে। বিছানা থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে সামান্য কিছু মুখে দিয়ে দু'এক জন বন্ধুকে সাথে নিয়ে সামান্য আনন্দের প্রত্যাশায় অজানার উদ্দেশ্যে ছুটে চলা। এভাবেই কেটে যায় প্রবাসীদের ঈদ নামের কষ্টের দিনটি।


প্রবাসী জীবনের কিছু বাস্তব কথা

 জীবন এত ক্ষণস্থায়ী বলেই মাঝে মাঝে সবকিছু এমন সুন্দর মনে হয়।


  • বেশি দিন ভালবাসতে পারে না বলেই ভালবাসার জন্য মানুষের এত হাহাকার।


  • তুমি যদি কাউকে হাসাতে পার, সে তোমাকে বিশ্বাস করবে। সে তোমাকে পছন্দও করতে শুরু করবে।


  • হৃদয়ের গভীরে যার বসবাস, তাকে সবকিছু বলতে হয় না। অল্প বললেই সে বুঝে নেয়।


  • মানবহৃদয় আয়নার মত। সে আয়নায় ভালবাসার আলো পড়লে তা ফিরে আসবেই।


  • কাগজে-কলমে কোন সৌন্দর্যের যথার্থতা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। সৌন্দর্যের মুখোমুখি গিয়ে দাঁড়াতে হয়।


  • সুখী হওয়ার একটা অদ্ভুত ক্ষমতা আছে মানুষের। এ জগতে সবচেয়ে সুখী হচ্ছে সে, যে কিছুই জানে না। জগতের প্যাঁচ বেশি বুঝলেই জীবন জটিল হয়ে যায়।


  • সব শখ মিটে গেলে বেঁচে থাকার প্রেরণা নষ্ট হয়ে যায়। যেসব মানুষের শখ মিটে গেছে তারা অসুখী।


  • যার কাছে ঘুম আনন্দময় সে-ই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ। অতি সামান্য জিনিসও মানুষকে অভিভূত করে ফেলতে পারে।


  • খুব বেশি সুন্দর কোন কিছু দীর্ঘস্থায়ী হয় না। খুব ভাল মানুষরাও বেশি দিন বাঁচে না। স্বল্পায়ু নিয়ে তারা পৃথিবীতে প্রবেশ করে।


  • যখন কেউ কারো প্রতি মমতা বোধ করে, তখনই সে লজিক থেকে সরে আসতে শুরু করে। মায়া-মমতা-ভালবাসা এসব যুক্তির বাইরের ব্যাপার।


  • বেশি নৈকট্য দূরত্বের সৃষ্টি করে। প্রিয়জনদের থেকে তাই দূরে থাকাই ভাল। সম্পর্ক স্থির নয়, পরিবর্তনশীল।


  • অতি দ্রুত যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, উষ্ণতা কমে যেতেও তার সময় লাগে না।


  • স্মৃতি সুখ বা দুঃখের যাই হোক, সবসময়ই কষ্টের। দুঃখ-কষ্ট-বেদনা ছড়াতে হয় না।  ছড়িয়ে দিতে হয় আনন্দ। দুঃখ ভুলে যাওয়া কঠিন। তবে সুখস্মৃতি মনে রাখা তার চেয়েও একটু বেশি কঠিন।


  • মোহের কাছে পরাজিত হওয়া ঠিক নয়। কিন্তু খুব কম মানুষই মোহযুদ্ধে অপরাজিত থাকে।


  • সুন্দর স্বপ্ন আফসোসেরও কারণ। বাস্তবতা যতই মধুরই হোক, স্বপ্নের মত হয় না।  স্বপ্ন পূরণ হতেই হবে সেটা কিন্তু সত্যি নয়। স্বপ্ন দেখতে হয় আর সেটার জন্য কাজ করতে হয় - এটা হচ্ছে সত্যি।


  • প্রতিজ্ঞা করার আগে তাই একটু হলেও ভাবা উচিত। মিথ্যা দিয়ে হাসানোর চেয়ে সত্য বলে কাঁদানোই শ্রেয়।


  • চোখের জলের মত পবিত্র কিছু নেই। এই জলের স্পর্শে সব গ্লানি-মালিন্য কেটে যায়।


  • কিছু কথা শুধু নিজের ভেতর রাখো। দ্বিতীয় কেউ জানবে না। কোনভাবেই না। দুই জন জানলে বিষয়টা গোপন থাকে।  তিনজন জানলে নাও থাকতে পারে। আর চারজন জানা মানে সবাই এক সময় জেনে যাবে।


  • রহস্য সৌন্দর্যের সৃষ্টি করে। কৌতূহলেরও জন্ম দেয়।


  • বলার আগে শুনে নাও, প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগে চিন্তা কর, সমালোচনার আগে ধৈর্য্য ধর, প্রার্থনার আগে ক্ষমা চাও, ছেড়ে দেয়ার আগে চেষ্টা কর।


  • না চাইতেই যা পাওয়া যায়, তা সবসময় মূল্যহীন।


  • পায়ের আলতা খুব সুন্দর জিনিস। কিন্তু আলতাকে সবসময় গোড়ালীর নিচে পড়ে থাকতে হয়, এর উপরে সে উঠতে পারেনা।


  • অতিরিক্ত যেকোন কিছু পতন নিয়ে আসে। সবকিছু তাই নির্দিষ্ট সীমায় রাখাই শ্রেয়।


  • চুপ থাকা খুব সহজ একটা কাজ। পারস্পরিক বহু সমস্যার সমাধান শুধু চুপ থাকলেই হয়ে যায়।  কিন্তু মানুষের সবচেয়ে বড় অযোগ্যাতা হচ্ছে সে মুখ বন্ধই রাখতে পারে না, অপ্রয়োজনে অনর্গল বকে যায়।


  • দুর্নামকারীরা সাধারণত আড়ালপ্রিয়। সামনে ভাল মানুষ সেজে বসে থাকে।


  • বুদ্ধিহীনরা তর্কবাজ হয়। নিজের বুদ্ধির অভাব তর্ক দিয়ে ঢাকতে চায়।


  • বিচার যখন থাকে না, সমস্যার সমাধানও হয় না। সব সমস্যা বরং পুঞ্জীভূত হয় আরও। আমাদেরও তাই হচ্ছে।


  • পরিস্থিতিই মানুষকে তৈরি করে। পরিস্থিতি যখন বদলে যায়, মানুষও তখন পাল্টে যায়। মানুষ আসলে জলের মত। পাত্রের সঙ্গে সঙ্গে সে তার আকার বদলায়।


  • এই পৃথিবীর প্রতিটি দিনই সম্ভাবনার। সম্ভাবনাময়ী এখানে আসলে আমাদের প্রতিটি মুহুর্তই।


  • মানবজাতি ধীরে ধীরে সব সুযোগকেই উপলদ্ধি করবে। অবশ্যই সব সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিবে।


  • উপকার করার পর 'করেছি' বলার চেয়ে সাহায্য না করাই শ্রেয়।


  • জীবনের জটিল ও মূল বিষয়গুলো মানবজাতির কাছে রহস্যাবৃত হয়ে থাকে। এর চেয়ে সুন্দর আর কী হতে পারে?


  • চলতে শুরু না করলে পথ হারাবার ভয় থাকে না। কিন্তু তাতে গন্তব্যে পৌছানোর আশাও ফুরিয়ে যায়। মৃত্যুপথযাত্রী মানুষ কারও কাছ থেকে বিদায় নেয় না।  মায়া নামক ভ্রান্তি তাকে ত্যাগ করে। গ্রাস করে তখন ভয় নামক অনুভূতি। মৃত্যু ভয়াবহ নয়, কুৎসিতও নয়। এর সৌন্দর্য জন্মের চেয়ে আসলে কোন অংশে কম নয়। এই অংশের সাথে পরিচিত নই বলেই আমরা একে এত ভয় পাই।


  • ভয়াবহ বিপদ কিংবা দুর্যোগের সামনে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। একে অন্যের কাছে আশ্রয় খোজেঁ, আশ্রয় খোঁজে প্রকৃতির কাছে। সবাই দাঁড়িয়ে যায় একই কাতারে।


  বৈষম্য ও অনাচার বেষ্টিত এই আবাসভূমি হয়ে যায় সাম্যবাদের উৎকৃষ্ট নিদর্শন। বড় ধরণের বিপদ-আপদের প্রয়োজন তাই পৃথিবীতে এখনও আছে।প্রতিটি বিপদের দুটি অংশ থাকে। বিপরীত অংশটি হল জীবন।


  • নগদ টাকা আলাদীনের চেরাগের মত। হাতে থাকলে পৃথিবী নিজের হয়ে যায়।


  • পথ কখনও শেষ হয় না। দীর্ঘ ভ্রমণের পর গন্তব্যে পৌছেও কেউ স্থির থাকে না। ছুটতে শুরু করে অন্য কাজে, অন্য পথে, অন্য আরেক লক্ষ্যস্থলে।


  • এক একটি দিন শেষ করে আমরা এগুতে থাকি চুড়ান্ত যাত্রার পথে। মানবমৃত্যুই পথের সমাপ্তি। নিরন্তর ছুটে চলা মানুষের শেষ গন্তব্য। সবাই মারা যায়। কিন্তু সবাই চলে যায় না।


  • নিঃস্বার্থ কর্মী মানুষরা মৃত্যুর পরও থেকে যায়, কর্মপূণ্যে থেকে যায় মানুষের মনে - যুগের পর যুগ ধরে।

  • সৎ থাকো। অবশ্যই সুখী হ

চোখে কান্না অবৈধ প্রবাস জীবনের গল্প

 মেয়ের বয়স ২০ বছর হলেও তাকে কখনও দেখার সৌভাগ্য হয়নি মাহতাব মিয়ার (ছদ্মনাম)। উভয়পক্ষে শুধু ছবি দেখেই বাবা-মেয়ের পরিচয়-সম্পর্ক।


একদিন মুখে দিগন্ত ছড়ানো হাসি নিয়ে সেই মেয়ের বিয়ের জন্য টাকা পাঠাতে ব্যাংকে আসেন মাহতাব।আমি তখন মালয়েশিয়ার অগ্রণী রেমিটেন্স হাউজে পার্ট টাইম চাকরি করি পড়াশোনার ফাঁকে। প্রতিদিন বাংলাদেশি শ্রমিক, চাকরিজীবীদের টাকা পাঠাই দেশে আত্মীয়দের কাছে।


অনেক গল্প, অনেক কষ্ট, অনেক আনন্দের কথা টাকাগুলোর সঙ্গে আসে-যায়। এর মধ্যে এমন দুই-একটা গল্প যেন গেঁথে যায় আমাদের মনে।


  মাহতাব মিয়া ২০ বছর আগে মালয়েশিয়া এসেছিলেন অবৈধ পথে। দেশ ছাড়ার সময় সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে রেখে আসেন তিনি।


  এরপর মেয়ে জন্মেছে, বড় হয়েছে, স্কুলে পড়াশোনাও করেছে। একসময় ভাল একটা সম্বন্ধ এসে বিয়েও ঠিক হয়েছে।


  যে বাবার প্রবাসের রোজগারে এই সব সম্ভব হচ্ছে সেই বাবাকে মেয়ে কোনও দিন সামনাসামনি দেখেনি।


  টাকা দিতে এসে মাহতাব বলেন, মেয়ের বিয়ের খবরে তিনি যে আনন্দ অনুভব করছেন তাতে নিজের এতদিনের কষ্ট যেন ভুলে গেছেন।


  এই ঘটনার প্রায় বছরখানেক পর বৈধ কাগজ হাতে পেয়ে দেশে ফেরেন মাহতাব, যখন তার মেয়ে ছিলেন সন্তানসম্ভবা।


  ঠাণ্ডু মিয়ার বয়স চল্লিশের কোঠায়। ১৮ বছর আগে এসেছিলেন মালয়েশিয়ায় অবৈধপথে। পরের আঠারোটা বছর মুখ বুজে কাজ করে গিয়েছেন।


  জেলে যাওয়ার ভয় আর কষ্টের কাজ মাথায় নিয়ে মাসে মাসে দেশে টাকা পাঠিয়েছেন।


  নিজের জীবনের স্বর্ণ সময় পার হয়ে যাওয়ার পর একদিন বৈধ কাগজ হাতে আসে। কাছের বন্ধুরা সবাই মিলে চাঁদা তুলে ঠাণ্ডুকে দেশে পাঠান বিয়ে করাতে।


  এর কিছু দিন পর আবার তার বন্ধুরা ব্যাংকে আসেন। ঠাণ্ডু বিয়ে করছে; সবাই মিলে টাকা তুলে পাঠান বিয়ের উপহার হিসাবে।


  দেশে রেমিটেন্স পাঠিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি বড় ভূমিকা রাখছেন প্রবাসীরা। মালয়েশিয়াতে কর্মরত প্রবাসীরাও তার অংশীদার।


  বৈধপথে এখানে কাজ করতে আসার নিয়ম ও সুযোগ- সুবিধার ব্যাপারে স্পষ্ট ধারণা না


  থাকায় অনেকেই দালালের খপ্পরে পড়ে পাড়ি জমান বিদেশে, যার পরিণতিতে অমানবিক জীবনযাপন করতে হয় অনেককে। 

এক জন প্রবাসির ২৪ বছরের প্রবাস জিবন

 এখন আর আমাকে নিয়ে আফসোস করি না.এখন আর পাওয়া না পাওয়ার হিসাব করি না.এখন আর হারানো যৌবনের জন্য ভাবি না.এখন আর মধ্যরাত্রি দূস্বপ্নে ঘুম ভেঙে গেল একা একা কাঁদি না.


এখন আর ২৪ বছরে ব্যর্থ প্রবাস জীবনের জন্য কাউকে দোষ দেই না.এখন আর ৪৫ডিগ্রী রোদের কাজ করার সময় একটু ছায়া খুঁজি না.জীবনের সমস্ত কষ্টগুলোকে আরবের মরুভুমিতে কবর দিয়েছি .তাই এখন আর আমার জীবনের কোন সুখের বা বেঁচে থাকার তাগিদা নেই.


যতদিন বাঁচবে প্রবাসে বাঁচবে,যদি মরণ হয়ে যেন প্রবাসে হয়.এই জীবনটাই যাদের জন্য বিলিয়ে দিলাম প্রবাসে আজ তাঁরাই আমার সবচেয়ে বড় শত্রু.


যাদের সুখের জন্য প্রবাসে কাটিয়ে দিলাম ২যুগ তাঁরাই বলছে যোগ্যতার নেই বলে আমি আজ দুখি.আজ থেকে অনেকদিন আগে বাবার সাথে যখন জমিতে ধান বুনতে বুনতে বাবাকে বলেছিলাম আমাকে বিদেশে পাঠান.


  আমি বিদেশ গিয়ে আপনের কষ্ট দূর করে দেব.আর অভাবে সাথে যুদ্ধ করতে হবে না.আমি ছিলাম বাবার প্রথম সন্তান তাই বাবার সাথে সব কাজ করতে হত আমাকে.আমারা ছিলাম ৩ভাই ৩বোন.


যখন স্কুলের সময় সবাই স্কুলে যেত আর আমি যেতাম ক্ষেতে কাজ করতে.তবে এখন আর সেইদিন নেই ছোট ২ভাই দেশে ভাল চাকরি করে.বউ সন্তান নিয়ে নিজের ফ্লাট নিয়ে শহরে থাকে.


ছোট ৩বোন চাকরি করে আর শ্বশুর বাড়িতে স্বামী সন্তান নিয়ে অনেক সুখে আছে.ওদের আর অভাবের সাথে যুদ্ধ করতে হয় না.


আমার প্রবাস জীবনের প্রথম ১৫বছরের সব টাকা ওদের পড়ালেখা জন্য খরচ করছি.কখনো ওদের আমার কষ্টগুলো বুঝতে দেইনি.যখন যা চাইছে দিয়েছি.আর এখন মনে হয় এটাই ছিল আমার সবচেয়ে বড় ভুল.এই ভুল প্রতিটি প্রবাসী করে.


  আমি প্রথম ১০বছর পর বাড়ি গিয়ে বিয়ে করলাম.আমাদের বাড়িটা খুব ছোট ও একটা ঘরছিল আমাদের.এতগুলো মানুষ একটা ঘর.যদি ও বাবা বলতে ঘর তুলার জন্য.আমি বলতাম ওদের পড়ালেখা শেষ হোক তারপর ঘর তুলবো.তাই আমি বাড়ি গিয়ে ছোট্ট একটা ঘর তুললাম দুচালে.বিয়ে কয়েক মাস অনেক সুখে কাটালাম.বউয়ের আদর সোহাগ পেয়ে ভুলে গেলাম ১০প্রবাস জীবনের কষ্ট গুলোকে.আসলে পুরুষের জীবনের সতি্যকারের স্বাদটা বিয়ে পরে আসে.সুখের দিন গুলো কখন যে ফুরিয়ে দেল বুঝতে পারলাম.৬মাসের ছুটির শেষে বাবা হবো খবর পেয়ে ও সাথে করে ৩লক্ষ টাকা ঋন করে আবার চলে আসলাম সৌদিতে.প্রবাসীদের সবচেয়ে বড় কষ্ট হলো ছুটি শেষে আবার প্রবাসে আসা.এই কষ্টটা শুধু প্রবাসীরাই বুঝতে পারে.প্রবাস জীবনের না পাওয়া ও হিসাব মিলাতে মিলাতে কেটে গেল অনেকগুলো বছর.


  এখন আমার ২৪বছর প্রবাস জীবনে আর আমার বয়স ৫৬.এখন আমার সংসারে অনেক বড় হয়ে গেছে ৩মেয়ে ও ১ছেলে.ছেলেটা সবার ছোট.অনেকদিন ধরে ভাবছি দেশে চলে যাবো.এখন আমার কাছে ১০লক্ষ টাকা আছে .মেয়েগুলো বিয়ে সময় হয়ে যাচ্ছে.এই টাকাগুলো মেয়েদের বিয়ে দিতে খরচ হয়ে যাবে.তাহলে ছেলেটার ভবিষৎ কি? এই নিয়ে প্রতিদিন বউয়ের সাথে ঝগরা.অনেক ভেবে দেখলাম বউয়ের কথাগুলোই সতি্য ,যে টাকা আছে ভাল পরিবারে মেয়ে বিয়ে দিতে গেল সব টাকা শেষ তাহলে ছেলের ভবিষৎ.আর এদিকে আমি ও বয়সের ভারে কালান্ত.আমাদের বাড়িটা ছিল ১৫শতাংশ,ও বিলে কিছু জয়গা আছে.২ভাইয়ের ৪ছেলে ও আমার এক ছেলে ভবিষৎ ঘর তুলার জয়গা থাকবে না,আবার বোনের অংশ আছে.বউ প্রায় বলতে আপনে তো ভাইবোনের জন্য অনেক কিছু করলেন ও তারা বাড়িতে থাকে না.


  বাবাকে বলেন আমাদের ছেলে জন্য ৩বোনের জয়গার অংশ লিখে দিতে.বউ বললো আপনের ২ভাই ঢাকা বাসায় নিয়ে ছেলে মেয়ে নিয়ে তো অনেক সুখে আছে ও আপনের বোনেরা নিজ সংসার নিয়ে অনেক সুখে আছে ওদের তো কোন কিছু অভাব নেই.আপনের কাছে কিছু টাকা আছে আর বিলের একটু জয়গা বেঁচে সেই টাকাগুলো দিয়ে মেয়েদের বিয়ে দিয়ে ও একটা সিএনজি কিনে চালাবেন এত আমরা সুখে থাকতে পারবো হয়তো আপনের ভাইবোনদের মত বিলাসীতা থাকবে না.ছেলেটার জন্য বাড়িটা তো আছে.বউয়ের কথাগুলো এক মাস ভাবে দেখলাম সতি্য বলছে.একদিন বাবাকে বললাম বউয়ের সেই কথাগুলো .কথাগুলো শুনে বাবা রেগে গেলেন অনেক গালাগালি করলেন.


  আর বললেন ওনি বেঁচে থাকতে কাউকে জায়গা দিবে না.ও বিক্রি করতে দেবে না.আর হাজারটা প্রশ্ন আমার এত বছরের টাকা কি করলাম সব টাকা নাকি শ্বশুরবাড়িতে দিয়েছি.বাবা একটা কথা অনেক কষ্ট পাইছি আমার ভাইবোনেরা তাদের যুগ্যতায় আজকে নাকি সফল ও সুখে আছে.আমি নাকি গন্ড মূর্খ তাই আমার কপালে এত কষ্ট.আর ওনার ছেলে মেয়েদের এক সুতা অংশ আমাকে টাকা বাদে দিবে না যদি টাকা দেই তাহলে ভাইবোনেরা দিবে.এই নিয়ে আমার বউয়ের সাথে প্রতিদিনই অনেক ঝগরা হয়.আমি বাবাকে বলেছিলাম আজ আমার ভাই বোনের সফল হত না যদি আমি টাকা না দিতাম.ওদের ক্ষেতে চাষ করে খেতে হত.এর পর বাবা বললো আমি জানি তোর কষ্ট .আমি তোর ভাইবোনদের জিজ্ঞাসা করবো যদি দেয় তাহলে তোকে লিখে দেবো নয়তো পারবো না.কারন তুই আমার সন্তান ওরা আমার সন্তান .যত থাকুক ওদের সম্পদ.


  কিছুদিন পর বাবা বললো ওরা টাকা ছাড়া জায়গা দেবে না.আমি আর বাবাকে কিছু বলি নাই.আমি বাবাকে দোষ দেই না কারন তার কাঁছে সবাই সমান.তবে পরে জানতে পারছি বাবা নাকি আমাকে জায়গা দিতে চেয়ে ছিলো.ভাইবোনদের প্ররোচনার কারনে দিতে পারে নাই.বাবাকে বলছে আমি বিদেশ থাকি যদি আমার বউ দেখেশুনা না করে তখন বাবার নাকি কষ্ট হবে.যাহাহোক আর আমি ও জায়গা চাইতাম না যদি ভাইয়েরা গ্রামের বাড়ি থাকতো.তবে মা চেয়েছিলো আমি যেন জায়গাটা পাই.এরপর গ্রামের বিচার সালিশে জয়গার দাম ধরা হলো ১২লক্ষ টাকা.কি করবো অনেক ভেবে চিন্তা করে রাজি হলাম.ভাইবোনদের জন্য তো ১০বছর প্রবাসে কাটালাম এখন যদি নিজের সন্তানদের জন্য কিছু না করি ওপারে গিয়ে কি জবাব দেবে.


  জীবনের বাকিটা সময় ছেলের জন্য না হয় কাটিয়ে দিলাম.ভাইবোনদের কাছে আজ আমি বেইমান ও খারাপ মানুষ এখন যদি নিজের ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু না করি তাহলে তো যতদিন বাঁচবো নিজের সন্তানদের কাছে অপরাধী হয়ে থাকতে হবে.মা বাবা ভাইবোন ও সমাজের সবাই জেনে ও আজ প্রশ্ন করে এতবছরের টাকা কি করলাম.যখন আমার ছেলেটি না দেখে প্রশ্ন করে করবে কি এত বছরের টাকা কি করলাম তখন কি জবাব দেবো ছেলেটির কাছে.তারপর কিছু টাকা ঋন করে বাড়ি ও বিলের জায়গা কিনে নিলাম.এখন আমি ৪লক্ষ টাকা ঋন নিয়ে বেঁচে আছি.ঋনের বোঝা এত ভারি যে কাউকে বুঝাতে পারবো না.বার বার শুধু মনে পরছে কেন আমি আমার জন্য কিছু করলাম না.আজ বেইমান স্বার্থপর হয়ে গেলাম যদি আজ থেকে ১৫ বছরের আগে বেঈমান ও স্বার্থপর হতাম তাহলে আজকে এই বুড়া বয়সে কেদে কেদে প্রবাসে কাটাতে হত না.এখন তো ভাইবোন বাবা সবাই সুখে আছে.এখন আমার পরিবারের কেউ ডাকও দেয় না.


  তখন খুবই কষ্টে লাগে যখন শুনি ওদের ব্যবহারের কথা.যাহাহোক প্রবাস জীবনের গল্প কখনো শেষ হবে না কারন আমরা প্রবাসে কখনো কঠিন ও বেঈমান স্বার্থপর হতে পারবো না. যে সমস্ত প্রবাসী ভাইয়েরা গল্পটি পড়বেন তাদের কয়েকটা কথা বলি.নিজের জন্য কিছু টাকা জমাবেন.নয়তো প্রবাস জীবন কখনো শেষ হবে না.আমার হয়তো কপাল খারাপ ভাইবোনদের বুঝাতে পারিনি.এই পৃথিবীতে কেউ কারো নয় স্বার্থ ছারা.আজ যদি আমার ভাইবোন আমাকে একটু সহয়তা করতে তাহলে এখন বাড়ি যে কোন রকম খেয়ে কাটিয়ে দিতাম.তবে সবার ভাগ্য এক নয়.আপনের ভাই হয়তো অনেক ভালো আপনের ভাল চাইবে কিন্তু ভাইয়ের বউ কখনো চাইবে না.তেমনি বোন চাইলে বোনের স্বামী চাইবে না.


  এই পৃথিবীতে নিজের সন্তান চেয়ে কেউ আপন হয় না.আমি যেমন বাবার কাছে আপন ,তেমনি আবার ভাইয়ের কাছে ভাইয়ের সন্তান.আবার আমার কাছে আমার সন্তান.এখন ভাইয়েরা আমার চেয়ে নিজের সন্তানকে নিয়ে ভাববে ও সন্তানের ভবিষৎ চিন্তা করবে এটা আমাদের সমাজের নিয়ম. 


নিজের জিবন থেকে নেয়া ছোট গল্প

 তোমার হৃদয়ের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে মনের বিস্তৃত আঙ্গিনা পেরিয়ে ভালবাসার স্রোতে বির্বতনের ধারায় বিবতির্ত হয়ে তরী ভিড়িয়েছিলাম তোমার কুলে। 


শূন্য তরী ভড়িয়ে দিয়েছিলে ভালবাসায় কানায় কানায়, কোন কিছু দাবী না করতেই উজাড় করে দিয়েছিলে দু’হাত ভরে। ঋনী হবার সুযোগ না দিয়ে চির জীবনের জন্য ঋনী করে রাখলে হৃদয়ের বন্ধনে মনোমন্দিরে। মোমের আলোয় আলোকিত করে রেখেছো এখনও আমার জীবনের প্রতিটি ক্ষণ।


  ভালবাসায় কাছে না থাকায় অবস্থান করছো অযতেœ অবহেলায়। যতটুকু প্রাপ্য আছে আমার কাছে তাও অপূরণ রাখছি দীর্ঘদিন। আবেগ ভরা কন্ঠে প্রায়ই বলো কি পেলাম জীবনে? আর কি পাবার বাকী আছে ?


 জীবনের কঠিন বাস্তবতায় হয়তো এ প্রশ্নের উত্তর কোনদিন দেয়া হবে না, মনের আবেগ লুকিয়ে কয়েক ফোটা চোখের জল ফেলা ছাড়া।


 সুখী করার অঙ্গীকার নিয়ে সত্যিকার ভালবাসায় জীবন অঙ্গিনা ভরিয়ে দিতে, সুখ স্বপ্নের বাসরসাঁজাতে বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে মাতৃভূমি ছেড়েছিলাম কয়েক বছর আগে। মা এবং মাতৃভূমির মায়া ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছি প্রবাসে।


  সৃষ্টিশীল মানুষের কাছে প্রবাস হলো দেয়ালহীন কারাগারসম। স্বপ্নরা প্রতিনিয়ত বাসাবাঁধে কিন্তু পূরণ হবার অবসর পায় না। সমস্ত স্বপ্ন এলোমেলো হয়ে যায়।


 রাত গভীর হলে আস্তে আস্তে স্বপ্নরা ভীড় করে মনের জানালায়, কাটে নির্ঘুম রাত অসংখ্য স্মৃতির ভীড়ে। মানুষের মন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বড় রহস্যময় মনের রহস্য ভেদ করা বড়ই কঠিন। প্রবাস জীবনের সমস্ত আদর আর অফুরান্ত ভালবাসা এই রহস্যে প্রতিনিয়তই ঘুরপাক খায়।


  মাঝে মাঝে মনে হয় ভালবাসার বরফগলা নদীতে আজ বড়ই সঙ্গীহীন,ভালবাসাহীন একা। রাত গভীর হলে আস্তে আস্তে দূশ্চিতা বাড়ে। মনের মাঝে দেশের ছোট ছোট স্মৃতি এসে ভীড় করে।


 জীবনের সমস্ত আদর,অফুরন্ত ভালোবাসার টানে মন ছুটে যায়,সোনারগাঁওয়ের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেষ্টিত ভিটিপাড়া গ্রামের পদ্মা বিধৌত জল-জোছনার কৈশোর প্রেমের তীর্থস্থান।


  আজও আমার মন প্রাণকে নাড়া দেয়, ভাবনায় স্বপ্নে আজও বিচরণ করি সরিষার ক্ষেতের পাশঘেষা মেঠো পথে আমার ছোট সন্তান সৌরভকে নিয়ে বিকাল বেলা ঘুরে বেড়ানো। 


মা, মাটির টানে গ্রাম্য মেঠো পথ ধরে সোনালী ধান ক্ষেতের পাশে। যেখানে শীষে খেলা করে ভোরের শিশির বিন্দু। সূর্য্যরে আলো পড়ে এক অরূপ দৃশ্য সৃষ্টি করে।


 যতক্ষন জম্মভূমির চিন্তুা মাথায় থাকে ততক্ষনই ভালবাসার সংস্পর্শে থাকা যায়। দেশের কথা ভাবলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। প্রতিটি প্রবাসীই জম্মভূমি ছেড়ে প্রবাসে থাকলেও মনের অজান্তেই দেশকে প্রতিমুহুর্ত অনুভব করে।


  একজন প্রবাসী সীমাহীন কষ্ট আর না পাওয়ার অতৃপ্তি নিয়ে প্রবাসী হয়। ভালবাসার কষ্টের সব সময় চোখের কোনে অশ্র“ হয়ে জমাট বাধার আগেই লুকিয়ে ফেলতে হয় দেশে অপেক্ষ্যমান প্রিয়জনদের কথা ভেবে। তাই প্রবাসীর দুঃখের অশ্র“ কেউ দেখে না। রুমালে মোছার আগেই মরুর তপ্তরোদে শুকিয়ে যায়। প্রতিটি রাত্রি ভোর হয় সঙ্গীহীন, ভালোবাসাহীন, মমতাহীন, একা। জীবনের দীর্ঘযাত্রায় অতীতের উৎসবের স্মৃতি বাংলার মাটি ও মানুষের মতো আমার অস্তিত্বে গভীর নোঙর বেধেঁ আছে আজও। বিদায় যে বড় কঠিন, বড় নির্মম সেদিন তা অনুভব করেছিলাম হাড়ে হাড়ে। দেশ প্রেম কি আত্মার সম্পর্ক কি সেদিন মন অনুভব করেছিল একান্ত করে। ১৩ই জানুয়ারী ২০১৪ই যখন আমি কুয়েত চলে আসি আমাকে বিদায় দিতে ঢাকা এয়ারপোর্ট সেদিন অনেকেই বোবা কান্নায় কেদেঁছিল।


  সবচেয়ে বড় একা হয়ে গিয়েছিল আমার সন্তান আমার দ্বিতীয় আত্মা। সে আমার কোলে গলা ধরে সবার দিকে ফেলফেল করে তাকিয়ে থেকে মাঝে মাঝে আমার গলায় চুমু দিচ্ছিল। আর আমি যেন অনেকটা বোবা পাথর হয়ে গিয়েছিলাম।


 সেদিন বিদায়ের বাঁশির সকরুণ সুর আজও আমাকে নীরবে কাঁদায়। একজন মানুষের শৈশব, কৈশোর, যৌবন, কর্মজীবন, এবং থাকে অবসর জীবনের বৃদ্ধকাল,জীবনের এই সময় গুলি যেন কোন সুষ্টিশীল মানুষের প্রবাসে না কাটে, সময় গুলি কাটে যেন মায়ের কাছাকাছি, মাটির কাছাকাছি, জম্মভূমির কোলে।


 প্রবাসী হয়ে বুঝলাম জীবনটা একটা একশন থ্রিলার মুভি। প্রতিমূহুর্তে নতুন নতুন দৃশ্যে হাজির হচ্ছি। স্বাভাবিক জীবনযাপন স্বাভাবিক মৃত্যু ভাবাই যায় না। প্রতিমুহুর্তে বিবেকহীন, মনুষ্যত্বহীন মানুষের কর্মকান্ড চোখের সামনে ভেসে উঠে। ভাবি কি ভাবে আমার সোনার দেশের সোনর মানুষ গুলি রাজনৈতিক কল্যানের কথা মুখে বলে কাজ করে সম্পূর্ন উল্টো।


  অতি সহজেই দেশের সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলে? ভাবি কিভাবে বিবেকবান মানুষ গুলি মনুষত্ব, মূল্যবোধ, বিবেকবুদ্ধিহীন হয়ে যায় নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য।


 একজন প্রবাসীর শ্রমে ঘামের অর্থে অনেক পরিবার চলে। এমন অনেক প্রবাসী আছে একমাস দেশে টাকা না পাঠালে সেই পরিবারে অনেক কিছুই বন্ধথাকে।


 আজ প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল কিন্তু, দেশের মানুষ কখনোই প্রবাসীদের দুঃখ কষ্টের কথা ভাবে না। মাস শেষ অর্থেও অপেক্ষায় থাকে।


 আমার মাঝে মাঝে মনে হয় যারা প্রবাসী হয় তারা এক সময় টাকা কামানোর মেশিনে পরিনত হয়, তাদের আবেগ,অনুভূতি ধীরে ধীরে লোভ পেতে থাকে, দুঃখ কষ্টকে আর দুঃখ কষ্ট বলে মনে হয় না।


 বিবেক দয়া মায়া আবেগ একসময় ফুরেিয় যায়। আমার মতো করে আরো অনেক প্রবাসী শ্রমিকের জীবন রো-শোক থাকে কিন্তু সময়ের অভাবে কাউকে বলতে পারে না।


  তাই দুঃখ নিয়ে বিলাসিতা করার সুযোগ প্রবাসীদের নেই। দুঃখ নিবারন করার ইচ্ছো নিয়ে মা মাটি ছেড়ে অজানা অচেনা দেশের মাটিতে আমরা আশার ঘর বেঁধেছি, সত্যি কথা বলতে কি প্রবাসীর কষ্ট প্রবাসী ছাড়া আর কেউ বুঝে না।


 অনুমান করে সব কষ্ট বুঝা যায় না। স্বপ্নের প্রবাস বাস্তবে বিশাল আকারের এক দানব। প্রতি মূহুর্তে এ দানব নামক প্রবাস প্রতিটি প্রবাসীকে কুরে কুরে খায় গুন পোকার মতো।


 পৃথিবীর ওজন থেকে আরো বেশী ওজনের কষ্ট বুকে নিয়ে আমার মতো আরো অধিকাংশ প্রবাসী রাত্রি ভোর করে। দু’হাত ভরে যতদিন দেবার সামর্থ থাকবে ঠিক ততদিন পরিবারের সবার কাছে প্রিয়। আমাদেরকে সুখের মাইল ফলক হিসাবে দেখা হয়।


  একাকীত্বের বেদনায় আমাদের নয়নে যখন জল ঝরে কেউ আদর করে কাছে ডেকে এই জল মুছে দেয় না। নয়নের জল নয়নেই শুকায়।


 প্রবাসী যান্ত্রিক জীবনের সাথে যুদ্ধ করে আমরা প্রাণে বেঁচে থাকি তবে এই বাঁচাকে বেঁচে থাকা বলা যায় না। আমাদের এই যান্ত্রিক জীবন এক একটি মূহুর্ত অসম্ভ বেদনাদায়ক। মানুষের জীবন বিচিত্রময় একঅধ্যায়। জীবন চলার পথে কখনো-কখনো কঠিন বিপদের সম্মুখীন হতে হয়,ঝড়াতে হয় সহস্র অশ্র“।


 আপনজনদের ভয়ে বেড়াতে হয় কষ্টের রেখা। খনিকের এ ছোট্র জীবনে অমরা সৃষ্টির সৃষ্ঠ মানব জাতি হয়ে খনিকের দুনিয়ায় কত না কি করে যাচ্ছি। 


আমি যখন টকবগে একজন যুবক ছোট একটা সংসার আমাদের। মা আছে বাবা নেই, সেই ছোট কালে আমাদের এতিম করে চলে গেছেন পরপারে। বাবার কথা মনে হলে আজোও দুচোখের অশ্র“তে বুক ভিজে যায়।


 লেখা পড়া পুরা পুরি শেষ করতে না পারলেও জীবন চলার পথে যতটুকু প্রয়োজন তা হয়তো করেছি। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীন ভাবে চলাটা আজকাল বড়ই কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে।


  অর্থ সম্পদের অভাবে কখনো-কখনো মানুষকে কঠিন বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। সংসারে নেমে আসে অভাব অনটন যন্ত্রনার আগুন। আর সে যন্ত্রনার আগুন নিয়ে ও মানুষ সামনের দিকে পথ চলতে থাকে স্বাপ্নীল জীবনটাকে সুন্দর সরে সাজাতে।


 মানুষের আয়ের উৎস না থাকলে দুঃখ,কষ্টে অভাবে দিন কাটাতে হয়। আর আয় করতে হলে চাই ব্যবসা বাণিজ্য চাকুরি। একটি চাকরির জন্য কত জায়গায় ধর্না দিলাম। বর্তমানে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে চাকুরীর ক্ষেত্রে।


 যে খানে একজন নিয়োগ দেওয়া হবে সেখানে প্রার্থী এসে ভীড় করছে শত-শত। না এতে আশ্চর্য হবার কিছুই নেই,এটাই বাস্তব। অনেক শিক্ষিত হয়েও বৎসরের পর বৎসর ঘুরেও চাকরী পাচ্ছেনা অনেক যুবক। দেশের জনসংখ্যা বিরাট অংশ বেকার।


 স্বাধীনতার ৪৩ বছর পেরিয়ে গেলো, আজো স্বাধীনতার সুফল তথা অর্থনৈতিক মুক্তি,ক্ষুধা, মঙ্গা ও দারিদ্রতা আমাদের দেশ থেকে দূর হয়নি একটি দেশ স্বাবলম্বী হতে ৪৩ বছর কি যথেষ্ট নয়?


  দুখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে আরও কত বছর লাগবে এ প্রশ্নটা রইলো দেশের বিবেকবানদের কাছে। এ ৪৩ বছর আমরা কি পেলাম।


 দেখলাম দেশের সমস্ত সম্পদ লুন্ঠিত যৎসামান্য বিকৃত চেহারার রাজনীতিবিদ নামধারীদের,আমলা কামলাদের দ্বারা। এরাই যুব সমাজকে বিপদে রাস্তায় ফেলে দিয়ে তাদের চরিত্র হনন করছে। বিপদগ্রস্থ যুব সমাজ দিশাহারা হয়ে পথে প্রান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছে।


 কর্ম নেই, মা বাবা ভাই-বোনদের মুখে অন্ন তুলে দেবার ক্ষমতা নেই, তুচ্ছ তাচ্ছিলতার আগ্রাসনে যুব সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করে ৭১-এ যুব সমাজের দেশ প্রেমের অংশ গ্রহণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। এখন যৌবন যার যুদ্ধে যারার সময় তার, কি করবে ভাবতে প্রতিদিন সন্ধ্যা হয়। ভাবনা শেষ হয় না।


 হবারও না, মা বাবার বকুনী ঘরে বিবাহযোগ্য বোন অথবা স্কুল কলেজগামী ভাইবোনের লেখা পড়া কাপড় চোপড় না দেবার বদৌলতে ব্যাকঠু হোম। সিদ্ধান্ত আসে বন্ধু মহল থেকে অতি গোপনে।


  এটি বড় কষ্টের। বিদেশ চলে যাও। এদেশে তোমার আমার কিছু হবে না। পদ্মা-মেঘনা-যমুনা তোমার আমার ঠিকানা। যমুনা ভাঙ্গনে বাড়ী ঘর গাছ পালা তলিয়ে গেছে। তাই ঠিকানাও নেই। বিদেশ যেতে হলে দৌড়-ঝাপ। ছুটাছুটি সন্ধান পেলেও সিকিভাগ সফলতা। বাকীটা ভিটে মাটি বিত্রি“ করে আত্মহত্যা অথবা বৈরাগ্য জীবন যাপনের জন্য রামগড়ের রাস্তা পরিস্কার।


  চোখের দেখা অনেক গোবর গনেশ গ্রামের পাতি নেতা আবুবক্কর ছিদ্দিক রবিন ওরফে বিল্লাল মুন্সির ছেলে-বোয়া ট্রাভেল এজেন্সী ওয়ালারা শত-শত কয়েক কুড়ি বেকার যুবককে যুদ্ধ বিগ্রহের আগুনে ঢেলে দিয়ে এসেছে মালশিয়া যাওয়ার জন্য নৌ চোরা পথে। অসহায় যুবকগুলোর কোন হদিস নেই। স্বজনদের আহজারি আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হচ্ছে। কেউ বলছে অনেকে মারা গিয়েছে নদী পথে শ্রমিক প্রেরণ কালে। সারাদেশের এমন আবুবক্কর ছিদ্দিক রবিন নামের পাতি দালালদের কোমরে রশি বেঁধে তাদের বিরুদ্ধে “ ছি-ছি” আন্দোলন শুরু হলে দৃর্নীতির একটা মূল তাগিদ সমাজ থেকে উৎপাটিত হবে।


  জানিনা এমন হবে কিনা। দেশের বড়-বড় নেতা আজ নিজেদের পকেট ভারি করছে যুব সমাজের জন্য কিছুই না। দুভাগ্যবশত এই সুন্দর সবার মধ্যে জাগে নাই। ভাগ-বাটোয়ারা করে তুমিও খাও,আমিও খাই। নিম্ন থেতলিয়ে যাচ্ছে একেবারে আমের ছোবরার ন্যায়। খেতে না পারলে যুব সমাজ করবেটা কি, না যেতে তখনই তাদের বদনাম হয়। অথচ ৭১র আগে তাদের সমাদর অনেক ছিল। এরা “আল্লা মেঘ দে পানি দে”ছায়া দের আল্লা ধ্বনিতে আল্লাহর কাছে খরা থেকে পরিত্রান পেতে পানি চেয়েছে। এরা ৭১র উত্তাল দিন গুলোতে কোটি স্মরণার্থীর সাহয্যে এগিয়ে আসছে।


  তাদের দৃঢ় মনে বলের কারণেই সুসজ্জিত এবং এশিয়ার সবচেয়ে ভালো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাক বাহিনীকে পরাস্ত করা সম্ভব হয়েছে। যুব সমাজের একটা আশা ছিল, এরা দেশের জন্য কিছু একটা করবে, দেশ উপকৃত হবে। ৪৩ বছর তা হয়নি, যুব সমাজ সবার আগে অবহেলিত। চাকুরী নেই তাতে কি হয়েছে। যুব সমাজ উন্নয়ন তথা কর্মসংস্থানের মত বাংলাদেশে প্রচুর সম্ভাবনা বিরাজমান। এক্ষেত্রে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় নানা পদক্ষেপ গ্রহন করা। দেশের প্রধান সমস্যা বেকার কর্মসংস্থান গ্রাম ওয়ারী প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যুব সমাজকে বিদেশের পথে পা বাড়াতে হবে না, প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিতে ক্ষুধার জ্বালায় মৃত্যুও কোলে ঢলে পড়তে হবে না। বেকারের অভিশাপে নিজের জীবন বিপন্ন করার প্রতিযোগিতা চলছে মহাসমারোহে।


  মরণব্যাধি নেশা পান করে যুব সমাজ ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। এমনও দেখছি মেধাবী ছাত্র বিশ্ববিদ্যায়ের পাঠ চুকিয়ে বেকার। শেষ অবধি নেশায় বুদ হয়ে নিজেকে লুকাতে ব্যর্থ চেষ্টা। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার হাজারো কিসসা কাহিনী। তেমনটা হয়েছিলো আমার জীবনে। অবশেষে সকল বাধা ছিন্ন করে পাড়িজমাই দুর পরবাসে। ১৫বছর আগে যখন প্রবাসের উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে রওনা দিচ্ছি তখন সবে মাত্র টক বগে যুবক। তার পর দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে দেশে গিয়ে বিয়ের সিঁড়িতে বসি। সময় গড়িয়ে মাস,মাস গড়িয়ে বছর তার পর হয়ে গেলাম বাবা। ছোট ছেলেটা আমার কোলে তাকে আদর করছি আর ভাবছি আদরের সন্তান ছেলেটিকে ছেড়ে কিভাবে থাকবো।


  সন্তানের মুখের দিকে থাকিয়ে দুচোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না আমি পরাজিত সৈনিকের ন্যায় দেশ থেকে চলে আসছি। দেশে রেখে আসছি আমার পরিবার পরিজনদেরকে। এক দেড় বছর পর দেশে যাই অতিথি হয়ে আর নিজ ভূমি হয়ে গেলো পরবাস। আবার চলে আসি সেই কর্মক্ষেত্রে। রয়ে যায় আপনজনরা। মাসের পর টাকা পাঠানো, চিঠি লিখা অথবা ফোনে ভালমন্দ জেনে নেয়া। এই চলছে ভানুমতির খেলা। দীর্ঘ সময়ে দেশের অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে।


  কাঁচা রাস্তা পাকা হয়েছে, পাকা রাস্তা গৎ হয়েছে, ছোটরা বড় হয়েছে আরো কত কি এখান থেকে দেশের অনেক আলোচিত অনালোচিত খবর হাবুডাবু খাই। শুনতে পাচ্ছি নানা খবর। ঘটনা ঘটার মূর্হুতে ইথারে ভেসে আসছে খবর। ভালো খবরে পুলকিত হই। দুঃসংবাদে খবরে দুঃচিন্তার সাগরে হাবুডুবু খাই। শেষ পযর্ন্ত বুঝেই নিলাম আমাদের প্রাণ প্রিয় বাংলাদেশ থেকে ভালো খবরের যে সম্ভাবনা আর নেই। অহরহ লেগে আছে বন্যা, খরা নদী ভাঙ্গন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ধাপ্পারাজ, বোমা হামলা, গুম খুন মানুষের সারি-সারি লাশ, নদ নদী আর রাস্তার পাশে অহরহ পাওয়া যাচ্ছে। সামনে আরো যে ভোগান্তি আছে জনগনের।


  তাই রাজনৈতিক অঙ্গনে ক্ষমতার বা ক্ষমতার বাইরে যারাই আছেন বাংলার সাধারণ শান্তি প্রিয় জনগন আপনাদের দিকেই চেয়ে আছে। ইতিহাস বলে যুগে যুগে জাতির দুরযোগের মুর্হুতে রাজনৈতিকবিদরাই বুক পেতে দিয়েছে, নিজেকে কিপ্পন করে জাতিকে সংগঠিত করেছে, পরিত্রাণ দিয়েছে। আজো কি তেমন কেউ বেরিয়ে আসবে না? কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। কোন চেতনা চলছে কোনটা চলবে।


  নেকড়ে থেকে চিতার আবির্ভাব কিনা তাও ইদানিং ভাবিয়ে তুলছে আমাকে,আমার মত অনেককে। প্রবাস নামের অট্রালিকায় থেকেও নয়ন ঝরে বিরহে কাদেঁ স্বজনের টানে মা মাটির টানে “পরবাসে দেশের জন্য মন কাদে”ঁ। 


ব্যর্থ প্রবাস জীবনের গল্প 😢

 >২০০৫ সালে ছিলাম বাবা মায়ের বেকার সন্তান। ৫ ভাইবোনের সংসার আমাদের। অভাবের সংসারে ক্ষনে ক্ষনে বুঝতে পারছিলাম বাবা মায়ের সংসারের বোঝা ছিলাম আমি। অনেক কষ্ট আর ঋন করে পারি দিলাম প্রবাসে।


 দীর্ঘ ৭ বছর প্রবাসে কাটিয়ে দিলাম সংসারের ঘানি টানতে টানতে। এক কথায় সংসারের সুখের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিলাম নির্লজ্জ অসহায় হয়ে প্রবাসের মাটিতে। নিজেকে অমানুষ মনে করে যেকোন কাজ করতে দ্বিধাবোধ করি নাই কখনো। সংসারের সুখের পিছনে ছুটতে ছুটতে কখন যে ৩৪ বসন্ত শেষ হলো বুঝতে পারিনি।


  যৌবনে বাতাস এসে বার বার মনে করে দিত যৌবনের সুখে হারিয়ে যেতে। তাই দীর্ঘ ৭বছর পর যৌবনের ডাকে সারা দিতে দেশে গেলাম। বিয়ে সব কাজ ঠিকঠাক করে রাখলো বাবা মা। মেয়ে ও ঠিক করে রাখলো।


  মেয়েকে আগে থেকে চিনি বলে আমার এ আপত্তি ছিল না। বিয়ে ৩দিন আগের রাতে পরিবারের সবাই আমাকে নিয়ে মিটিং এ বসল। প্রথমে বাবা বলল বিয়ের সব আয়োজন করতে ৬লক্ষ টাকা লাগবে। তখন বাবা বললো আমাকে টাকা দিতে।বাবার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে গেলাম। মনে হলে আকাশটা ভেঙে মাথার উপর পড়ল। বাবাকে বললাম আমার কাছে টাকা নাই।


  যা টাকা বেতন পেতাম সবাইতো আপনাকে দিয়েছি মাসে মাসে। বাবা সহ কেউ আমার কথা বিশ্বাস করলো না। বাবা রেগে সরাসরি বললো টাকা দিলে বিয়ে হবে নয়তো সে কালকে বাড়ি থেকে চলে যাবে। কি করবো বুঝতে পারছিলাম না । দুচোখে অন্দকার দেখতে লাগলাম। বাড়ি চেনা মানুষগুলো অচেনা হয়ে গেল। আমি সবাইকে বার বার বলে কেউকে বিশ্বাস করাতে পারলাম না আমার কাছে টাকা নাই। বিয়ে না হলে মান সম্মান বলতে কিছু থাকবে না,সেই চিন্তা সারা রাত অনিদ্রায় কাটিয়ে দিলাম।


  সকালবেলায় না খেয়ে এক বন্দুর বাড়ি গিয়ে বন্দুকে সব খুলে বললাম। বলার পর ১লাখে বছরে ৩০হাজার টাকা সুদে ৪লাক্ষ টাকা ঋন নিলাম বাকি ২লক্ষ টাকা প্রবাসি বন্দুদের থেকে ধার নিয়ে বাবাকে দিলাম। তো বাবা টাকার কথা সব খুলে বললাম কিভাবে জোগার করলাম। বাবা আমার কথার কোন উত্তর দিল না। অবশেষে অনেক জামেলার পর বিয়ে সম্পন্ন হলো। বিয়ে প্রথম ক’মাসে আল্লাহ রহমতে বাবা হব খবরটা পেলাম,তাই ছুটির ৩মাস বাকি থাকতে আবার চলে এলাম কুয়েতে। এসে শুরু করলাম দিনরাত কাজ।


  নিজেকে বিলিয়ে দিলাম কাজের মধ্যে। ঋন যন্তনায় ঘুম আসতো না,কখন শেষ হবে ঋন। আর ক্ষনে ক্ষনে বুঝতে পারলাম ঋন থাকলে প্রবাস জীবনটা যে কত যন্তনার আর কষ্টের। মাসে মাসে যা বেতন পাই সবই ঋন দেই।


 আগের মত টাকা বাড়িতে দিতে পারি না বলে বাড়ি সবাই আমাকে সন্দেহ করতে লাগলো। আর বলতে শুরু করল আমি বেতনের সব টাকা শ্বশুর বাড়িতে দেই। এই নিয়ে শুরু হলো শ্বশুর বাড়ি লোকদের সাথে আমাদের বাড়ির ঝগড়া। ঝগড়ার কারনে আমার মেয়েকে আর বউকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ আমি বাবাকে আগেই বলছি আমার ঋনের কথা কেউ আমাকে বিশ্বাস করেনি,কি ছিল আমার ভুল? কি ছিল আমার অপরাধ?


  যে ভুলের কারনে আজ একা একা জ্বলছি দূরপ্রবাসে। আমি তো চেয়ে ছিলাম সবাইকে নিয়ে সুখে থাকতে। কি পেলাম নিজের আপনজনদের থেকে যন্তনা ছাড়া? যাদের জন্য জীবনের অনেকগুলো বছর যন্তনার প্রবাসে। যাদের সুখের জন্য জীবনে সকল চাওয়া পাওয়া গুলোকে কবর দিয়ে ছিলাম কুয়েতের মরুতে। আজ আমার মেয়েটি বলে আব্বো তুমি কবে আসবে বাড়ি? তোমার কি আমাকে দেখতে মন চায় না? যখন মেয়ের কথা গুলো শুনি তখন আর ধরে রাখতে পারি না চোখের পানি গুলোকে।


  কি বলব আমার মেয়েটিকে? আমি জানি না তো কবে দেশে যাবো। এখনো যে ঋন শেষ করতে পারলাম না, একদিকে ঋন আবার সংসারের খরচ। মেয়েটিকে মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বলি আগামী মাসে আসবো, কিন্তু আমার তো আগামি মাস আসে না!! 


রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১

প্রবাসিদের ভাবনা 😒😒😒

 > যারা প্রবাসে চলে গেছেন দেশ ছেড়ে তাদের আপন মানুষজন ছেড়ে তাদের ভাবনায় শুধু একটা ভাবনাই থাকে, আমার মা ভালো আছে তো! আমার বাবা ভালো আছে তো! আমার সন্তানরা ভালো আছে তো! এই ভাবনাগুলো তাদের আরো ভাবিয়ে তোলে যে, তাদের যত কষ্টই হোক না কেন তাদের উপার্জন করতে হবে। 


তখন তারা বুকে পাথর চাপা দিয়ে কাজে নেমে যায়, যে নেমে যাওয়ার মধ্যে আর কোনো দ্বিধা থাকে না, দ্বন্দ্ব থাকে না, থাকে শুধু একটাই ভাবনা যে, আমাকে ভালো কিছু করে দেশে গিয়ে পরিবারের প্রত্যেকটা মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে হবে। যে ফোটানোর মধ্যে কোনো ক্লান্তি থাকবে না, ক্লেদ থাকবে না, তৃষ্ণা থাকবে না, থাকবে না এর কোনোকিছু।


  কেননা তারা তাদের কথা ভেবে প্রবাসে যায় না, তারা তাদের পরিবারের কথা, দেশের কথা ভেবে বিদেশ যায়। গিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে তারা অর্থ উপার্জন করে দেশে পাঠায়।


 দেশ থেকে একজন মানুষ যখন প্রবাসে যায় তখন তার ভাবনায় সবচেয়ে আগে যে ভাবনাটা থাকে সেটা হলো আমাকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে,


 যে অর্থ দিয়ে আমি বিদেশে এসেছি আমাকে তা শোধ করে পরিবারের জন্য কিছু নিয়ে দেশে ফিরতে হবে। যে ফেরার মধ্যে থাকবে মমতা বা পাওয়ার ফেরা এবং তার কোনো কিছুর পাওয়ার ইচ্ছা পূরণের আকাঙ্খা।

দেশে প্রবাসীদের গুরুত্ব 😒😒

  1.  আমাদের দেশের কথা যদি আমি বলি তবে বলব যে, আমাদের দেশে প্রবাসীদের কোনো গুরুত্ব নেই, আছে অবহেলা। একজন প্রবাসী দেশের জন্য কাজ করতে গিয়েও যতটুকু অবহেলা সহ্য করে আত্মসম্মানের বোধ ত্যাগ করে কাজ করে সেটা আসলে আমাদের এই দেশ কখনোই বোঝেনি বা বোঝার চেষ্টা করেছে বলে তা ততটা স্পষ্ট মনে হয় না আমার কাছে কারণ আমার কাছে আমাদের দেশে প্রবাসীদের মূল্য শূন্য। কেন এমন তা হয়তো আমার জানা না থাকলেও জানা আছে সরকার কিংবা সরকারের উচ্চপদস্থ নেতাদের।


  আমাদের দেশে যে হারে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রবাসীরা যদি দেশ ত্যাগ করে না যেত তাহলে দেশ আর দেশের মতো থাকত না। দেশ বৃন্দাবনে চলে যেত। ব্যাপারটা অনেকটা হাস্যকর মনে হলেও তা সত্যি। 


প্রবাস জীবনের এক করুণ গল্প 😭😭

>> আমি একজন প্রবাসী। প্রবাস কথাটা শুনলেই কলিজার পাশ কাটিয়ে একটা দাগ কেটে যায়। যখন দেশে ছিলাম তখন আমার বাবা ছিলেন একজন প্রবাসী। বাবার কাছে কত চাহিদা ছিল, সব চাহিদা বাবা হাসিমুখে পূরণ করতেন।


 তাই আমিও ভেবে নিয়েছিলাম প্রবাসে মনে হয় অনেক সুখ আর টাকা বাতাসে ওড়ে। তাই বাতাসের উড়ন্ত টাকা ধরতে চলে এলাম প্রবাসে; আর আমার নাম হয়ে গেল প্রবাসী। প্রবাসে আসার সঙ্গে সঙ্গেই বুঝে গিয়েছিলাম জীবন কী জিনিস।


 যেদিন এসেছিলাম তার পর দিন থেকেই কাজ শুরু করেছিলাম। ভালো প্যান্ট-শার্ট পরে যখন গাড়িতে করে কাজের স্থানে নিয়ে গিয়েছিল, তখন মনের সব স্বপ্ন চোখ দিয়ে বের হয়ে ওড়ে গেল ওই নীল আকাশে- যেখানে স্বপ্ন দেখতাম চেয়ার-টেবিলে বসে অফিস করব।


 এভাবেই প্রতিটা প্রবাসী একদিন তার নিজ স্বপ্নগুলোর কথা নিজের অজান্তেই ভুলে যায়। যতই দিন যায় ততই চাহিদা বাড়ে; কিন্তু বেতন বাড়ে চাহিদার ১ শতাংশ।


 একটা প্রবাসীর কাঁধের ওপর ভর করে কয়েকটা জীবন স্বপ্ন সাজায় ভালো থাকার। প্রবাসী ছেলেটা হাজারো কষ্টের বিনিময়ে পরিবারের জন্য মাস শেষে টাকা পাঠায়, বসের কাছে প্রতিদিন কত কথা শুনতে হয় তা শুধু যারা প্রবাসে থাকেন তারাই জানেন।


  সারা দিন কাজ করে বাসায় ফিরে কাপড় পরিষ্কার করতে হয়, রান্না করতে হয়, গোসল করে বাড়িতে ফোন দিয়ে সবার খোঁজখবর নিতে হয়- তাও হাসিমুখে।


  কিন্তু বাড়ি থেকে শুনতে হয় শুধু চাহিদার কথা। এই মাসে এত লাগবে, এই খরচ ওই খরচ শুধু খরচ আর খরচ। আর সেই চাহিদার বোঝা মাথায় নিয়ে যখন ছেলেটা ঘুমাতে যায়, তখন আর ঘুম আসে না চিন্তায়।


  রাত শেষ হয়ে ভোর হয়। আবার কাজ শুরু সকাল ৮ থেকে রাত ৯টা-১০টা। এভাবেই চলতে থাকে একজন প্রবাসীর গল্প।


  আজ একজন ছেলের এক মাসের ইতিহাস লিখব এখানে। ছেলেটার নাম আব্দুল্লাহ, বাড়ি টাঙ্গাইল। সিঙ্গাপুর থাকে চার বছর হল।


  ছেলেটার মনে অনেক অভিমান, সেগুলো এখানে নাইবা বললাম। প্রতি মাসে ওর ফ্যামিলি বেতন পাওয়ার আগেই চাপে রাখে টাকার জন্য।


  আব্দুল্লাহ আমার সঙ্গেই থাকে। ওকে আমার অনেক ভালো লাগে। দেখতে সুন্দর, খোঁচা খোঁচা দাড়িগোঁফ। একসময় ক্লাসের ফাস্ট বয় ছিল। এসএসসি ও এইচএসসিতে এ-প্লাস ছিল। সংসারের অভাবের তাড়নায় সে আজ প্রবাসী।


  আমি ওর সুপারভাইজার হওয়ায় আর বড় ভাইয়ের স্নেহ দেয়ায় সে সব কিছু শেয়ার করত আমার সঙ্গে। গত কয়েক মাস ধরে আব্দুল্লাহ মনমরা হয়ে থাকত। বেতন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সব টাকা দিয়ে দিতে হয়।


  কয়েক দিন হল আব্দুল্লাহ চুপচাপ হয়ে গেছে; কিছু জিজ্ঞেস করলেই চোখ ছলছল করে ওঠে আর বলে ভাই- স্যালারি দেবে কবে?


  প্রতি মাসের ৬-৭ তারিখ বেতন আসে; কিন্তু আজ ১০ তারিখ বেতন আসেনি। বাড়ি থেকে একটু পর পর ফোন দিচ্ছে টাকার জন্য।


  ওর খাবার টাকাও শেষ। কাজে আসার জন্য প্রতিদিন বাস ভাড়ার টাকা তাও শেষ এক সপ্তাহ আগেই। এক সপ্তাহ আগে সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি রেডি হয়ে বসে আছে, কিন্তু রুম থেকে বের হচ্ছে না।


  কাছে যেতেই বলল ভাই কাজে যেতে পারব না। পরে ২০ ডলার দিয়ে কাজে যেতে বললাম।


  আজকে ১০ তারিখ হয়ে গেছে কিন্তু বেতন আসেনি, টাকাও নাই। লজ্জায় বা যে কোনো কারণে আমাকেও কিছু বলেনি। একা একাই রুম থেকে চুপ করে বের হয়ে গেল।


  ট্রেন স্টেশন এসে আব্দুল্লাহ আশায় আছে যদি কোনো পরিচিত কেউ আসে তার কাছ থেকে ২ ডলার নিয়ে টিকিট কেটে আসবে। কিন্তু পরিচিত কাউকে পায়নি, তাই অপরিচিত কয়েকজন বাংলাদেশি ভাইয়ের কাছে হাত পেতেও ২ ডলার পায়নি। কিন্তু সে মাস শেষে ঠিকই ৮০ হাজার টাকা বেতন পায়।


  আব্দুল্লাহ তখন নিরুপায় হয়ে এক সিঙ্গাপুরিয়ান মহিলার কাছে ২ ডলার চায়। লিখতে গিয়ে আমার চোখের জল ফোনের ডিসপ্লেতে পড়ছে।


  কি বলব ভাই বিশ্বাস করেন সঙ্গে সঙ্গে ওই ভদ্রমহিলা ১০ ডলার দিয়ে বলল ‘বেবি ইউ হ্যাভ ফুড মানি?’


  এই কথা বলার পর আব্দুল্লাহ সঙ্গে সঙ্গে কান্না শুরু করল। ভদ্রমহিলা আবারও বলল- ‘ডন্ট ক্রাইং মাই বেবি’ প্লিজ টেল মি এনি মোর প্রবলেম? আব্দুল্লাহ আবেগে থ্যাংকস ছাড়া আর কিছুই বলতে পারেনি।


  শিক্ষা :

 একজন প্রবাসী পরিবারের চাহিদা মেটাতে গিয়ে অনবরত নিজের জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচে প্রবাসের একেকটা প্রবাসী একেকটা আব্দুল্লাহ।


প্রবাসীদে কস্ট 😥😥

 >দেশ থেকে যারা বিদেশ যান আমরা তাকে প্রবাসী বলি। কেননা তারা আপন জায়গা ফেলে একটু ভালো থাকার জন্য পরবাসে চলে যান।


 কেন যান?

 আমাদের দেশে কর্মসংস্থানের অভাব বলে, বিদেশের মতো সুযোগ-সুবিধা নেই বলে, বেতন কম বলে ইত্যাদি কারণে। এই কারণগুলোও থাকত না, আমরা যদি আমাদের দেশের ভেতরের, দেশের মানুষদের জন্য যদি সঠিক উপায়ে সুষ্ঠু কর্মসংস্থানের বৃদ্ধি করতে পারতাম। এ নিয়ে আসলে একার পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়, কাজ করতে হবে সরকারকেও।


  দেশ থেকে প্রবাসে গিয়ে কি খুব ভালো থাকে কেউ? না, দেশ থেকে সবকিছু ছেড়ে যেমন তার মা-বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজনদের রেখে যখন প্রবাসে একা একটা মানুষ যায় বা কাজ করে তখন তার মনটা কিন্তু পড়ে থাকে দেশের মাটিতেই। মনে পড়ে তার মা-বাবার কথা, ভাই-বোনের কথা, স্ত্রী-সন্তানের কথা। তখন তার আর কাজ করতে ইচ্ছে হয় না।


  ইচ্ছে হয় সবকিছু ছেড়ে দিয়ে পুনরায় দেশে চলে আসতে। কিন্তু না, সময় এবং পরিস্থিতি তা করতে দেয় না, কেননা সে যদি বিদেশ থেকে দেশে এসে পড়ে তবে তার আপন মানুষগুলো অর্থকষ্টে ভুগবে, তিনবেলার খাবার একবেলা খেতে হবে, কোনো কোনো বেলা আবার না খেয়েই থাকতে হবে। এটা তার চোখের সামনে ঘটলে সে সহ্য করতে পারবে না।


   তাই শত যন্ত্রণার পরও দেশের মানুষটি প্রবাসে থাকে তার কষ্ট হলেও যাতে তার প্রিয় মানুষগুলো একটু ভালো থাকে, একটু স্বস্তিতে থাকে, একটু সুন্দর থাকে, সে যেন পরবর্তীতে দেশে ফিরে সে মানুষগুলোর হাসিমুখ দেখতে পারে। আহা, তার কাছে তখনই পরম শান্তি বলে মনে হয়। মনে হয় এই মুহূর্তটার জন্যই তো দেশের বাইরে থাকা, খানিক কষ্ট করা।


  আব্দুল মালেক (২৯) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার সুজামুরি গ্রামের মো. মুচারবের ছেলে ২০০৭ সালের কলিং ভিসায় অ্যালমুনিয়াম কোম্পানিতে মালয়েশিয় আসেন। দীর্ঘদিন কাজ করেন কোম্পানিতে। ৩ বছর পর আর ভিসা করেনি কোম্পানি বাধ্য হয়ে কোম্পানি থেকে ফেরারি হন। পরে রি-হিয়ারিং এর আওতায় বৈধতা লাভ করেন কিছুদিন হলো। কাজ করেন মুরগী কাটার দোকানে। মাসে বেতন পান ১২ শ রিংগিত তা দিয়ে চলে না।


  পার্ট টাইম কাজ করেন পুত্রাযায়া একটি কাপড়ের দোকানে সেখান থেকে আসে আরো এক হাজার রিংগিত। সর্বমোট মাস শেষে ২২শ রিংগিত পান। সেখান থেকে নিজের খরচের টাকা রেখে বাকি টাকা দেশে পাঠিয়ে দেন। ইচ্ছে করলেও নিজের আরাম আয়েশ ছেড়ে বীরদর্পে কাজ করে চলেছেন আব্দুল মালেক। কারন দেশে দুটি জমজ মেয়ে সন্তান চিনহা/চিন্তা, স্ত্রী, মা-বাবা রয়েছেন। তাদেরকে সুখে শান্তিতে রাখতে এই কষ্ট। আবদুল মালেকের মতো হাজারো আবদুল মালেক মালয়েশিয়ায় কাজ করে যাচ্ছেন।


  আমরা আসলে জানি না একটা দেশের ছেলে অন্য আরেকটা দেশের মাটিতে কেমন কষ্ট করে আয়-উপার্জন করে। এই বিষয়গুলো আমাদের জানারও তেমন বিষয় নয়, কেন নয়? এই বিষয়গুলো জানা কি আমাদের দরকার নয়। নাকি এই বিষয়গুলো পাথর চাপা দেয়ার মতো কোনো বিষয়। না, দেশে থেকে একটা মানুষ বুকে কতটা কষ্ট নিয়ে দেশের বাইরে যায় তা হয়তো যে মানুষটা যায় সে মানুষটার থেকে ভালো আর কেউ বলতে পারবে না বা জানে না।


  কেননা দেশ থেকে একটা মানুষ সুস্থ অবস্থায় বিদেশে গেল ঠিকই সে মানুষটা বিদেশ থেকে অসুস্থ অবস্থায় ফিরে আসে দেশে। তখন তার প্রিয়গুলোর কষ্ট হয় কিন্তু প্রিয় মানুষ ছাড়া বাইরের কোনো মানুষের কষ্টের লেশমাত্র হয় না। কেননা সে মানুষটা তো শুধু তার আপন মানুষগুলোর জন্যই কষ্ট করছে। তা ভুল। সে মানুষটা কষ্ট করছে একটি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য, দেশের সতেরো কোটি জীবনের জন্য, জীবনগুলোর বেঁচে থাকার জন্য।


প্রবাসিদের কস্ট 😥

  আমাদের বুঝতে একটু কস্ট    হয় যে প্রবাসিরা  বিদেশ গেলে কেন দেশে আসে না বা দেশে আসার কথা চিন্তা করে না, না করার কারণ তারা দেশে ফিরলে তাদের ...